ফরসেজ কি বন্ধ হবে? ব্লকচেইন এর মালিক কে কিভাবে কাজ করে?

0
111
ফরসেজ কি বন্ধ হবে
ফরসেজ কি বন্ধ হবে

অনেকেই অনেক তথ্যের ভিত্তিতে মনে করেন ব্লকচেইন আজব জিনিস যা কখনোই বন্ধ হবে না আর এটি কোন কোম্পানি দ্বারাও প্রচালিত নয়। আজ এই পোস্টে আমি আপনার এই সমস্ত ভূল ধারনাকে দূর করবো।

ব্লকচেইন এর মালিক কে

ব্লকচেইন মানে কি এটাই আগে জানার বিষয়। আমি ছোট একটি উদাহরনে আপনাকে ইন্টারনেটের পুরো ব্যপারটি এবং ব্লকচেইনের পার্থক্য সমন্ধে বুঝানোর চেষ্টা করছি। আপনিও জানেন যে ইন্টারনেটের নিদৃষ্ট কোন মালিক নেই। অর্থাৎ ইন্টারনেট কোন মানুষ নিয়ন্ত্রন করে এমন কিছুই নেই। তবে ইন্টারনেটের সকল কিছুন আমরা মানুষেরা নিয়ন্ত্রন করে থাকি। এখানে বিষয়টা হচ্ছে ইন্টারনেট একটি অদৃশ্য প্যাকেট। যার মধ্যে বিভিন্ন নামের বিভিন্ন কাজের বিভিন্ন বস্তু রয়েছে।

এখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক, ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক, বিভিন্ন ওয়েবসাইট বা আরো বিভিন্ন বস্তু মিলে তাকে একত্রে ইন্টারনেট বলা হয়। এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক বা আরো যা যা থাকে এই ইন্টারনেট নামক প্যাকেটে তার সবগুলোই একাধিক কোম্পানি দ্বারা পরিচালিত। যেমন আমাদের দেশে বাংলালিংক, গ্রামিনফোন, রবি, এয়ার্টেল, টেলিটক কোম্পানির দ্বারা মোবাইল নেটওয়ার্ক পরিচালিত হচ্ছে। তবে বোঝার বিষয় হলো এই কোম্পানিগুলো ওয়াইফাই এবং স্টারলিংক সহ নতুন নতুন কিছু টেকনোলজির কাছে টিকে থাকার যুদ্ধ শুরু করেছে। ভবিশ্যতে হয়তো এই কোম্পানিগুলোর আংশিক বা সম্পুর্ন হারিয়ে যেতে পারে কিন্তু তখনো ইন্টারনেট নামক প্যাকটি কিন্তু হারাবে না।

হারাবে না কারন, তখন যে নতুন সিস্টেমগুলো থাকবে, সেগুলোই হবে ইন্টারনেট। বা সেই সকল বস্তুই তখন ইন্টারনেট নামক প্যাকেটটির ভেতরে দখল করে রাখবে। আবরা যদি এই মোবাইল নেটওয়ার্কেও রাখা হয় তবুও কিন্তু ইন্টারনেট ঠিকই থাকবে।

তো এখানে শুধু ব্লকচেইনকে আমরা ইন্টারনেটের স্থানে স্থাপন করে দিলেই হবে। ব্লকচেইন এমন একটি নেটওয়ার্ক। এখানে অসংখ্য ইনকাম উপায় এবং কারেন্সি বা কয়েন থাকতে পারে। এই সব মিলিয়ে একটি চেইন বা প্যাক তৈরি হয়েছে। যাকে আমরা একনামে চেনার জন্য ব্লকচেইন বলি।

ব্লকচেইনের কোন মালিক নেই। তবে সেখানে অসংখ্য কোম্পানি রাজত্ব করে। ঠিক সেগুলোর মধ্যেই একটি হলো ফরসেজ।

ফরসেজ কি বন্ধ হবে

যেহেতু উপরের অংশে ব্লকচেইন সমন্ধে বুঝে এসেছেন। তাই আর বলতে বাধা নেই যে ফরসেজ একটি কোম্পানি ভিত্তিক সংস্থা। যদিও আপনাকে অনেকে অনেক ধরনের আযব তথ্যের বর্ননা দিয়ে ভিন্নতা বোঝানোর চেষ্টা করবে।

ফরসেজ যে ব্লকচেইন না এবং এটি একটি কোম্পনি ভিত্তিক সংস্থা সেটি বোঝার জন্য নিচে কিছু প্রমান দেওয়া হলো।

১. ফরসেজ কোন ব্লকচেইন না। এটি ব্লকচেইনেের ই একটি অংশ। এই সাইট টি মুলত তাদের মধ্যে বিভিন্ন কাজ করার মাধ্যমে মানুষকে অর্থ প্রদান করে থাকে। আর এই পদ্ধতিকেই একত্রে ব্লকচেইন বলা হয়। ( মোবাইল নেটওয়ার্ক ইন্টারনেটের একটি অংশ তাই তাকে আমরা ইন্টারনেট বলতে পারি, তবে সে পুরো ইন্টারনেট নয়। তার সাথে আরো অনেক বস্তু রয়েছে ইন্টারনেটে। মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকলে ইন্টারনেট শেষ হবে বা হবে না অথবা ইন্টারনেট যত দিন থাকবে মোবাইল নেটওয়ার্ক ততদিন থাকবে এরকম কোন প্রশ্নই নেই।)

তার মানে ফরসেজ কোম্পানি ভিত্তিক তাই এটি বন্ধ হয়ে যেতেই পারে। ফরসেজ বন্ধ হলেও ব্লকচেইন শেষ নয়। আর ব্লকচেইন টিকে থাকার পেছনে ব্লকচেইন গুরুত্বপূর্ন নয়।

২. ব্লকচেইনের পরিচালনায় নির্ধারিত কোন কোম্পানি নেই। অর্থাৎ গুগল কোম্পানির সার্স ইন্জিন গুগল কোম্পানির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। কিন্তু ইন্টারনেট কিন্তু কারো হাতের নিয়ন্ত্রনে চলে না। ঠিক ব্লকচেইন ও কারো হাতে নয় বরং এটি ফরসেজ এর মতো অসংখ্য কোম্পানির একটি প্যাকেট। এই কোম্পানিগুলোর উন্নতি মানেই ব্লকচেইনের উন্নতি।

৩. ব্লকচেইন কোন কোম্পানির নয়। ব্লকচেইনের কোন মালিক কেউ নয়। ব্লকচেইনের নির্ধারিত কোন অ্যাপ অথবা ওয়েবসাইট ও নেই। যেহেতু এটি একটি প্যাকেট বা প্যাকেজ তাই থাকার ও কথা নয়।

৪. ফরসেজ এর একটি কোম্পানি রয়েছে। ফরসেজ এর অ্যাপ প্লে স্টোর থেকে পাওয়া যায়। ফরসেজ এর ওয়েবসাইট রয়েছে। যেহেতু এগুলো চালানোর জন্য এবং ডিজাইনের জন্য একজন বা একাধিক জন প্রয়োজন তাই অবশ্যই এর পেছনে কে বা কারা অবস্থান করে।

৫. আপনারা জানেন যে প্লে স্টোরে অ্যাপ পাবলিশ করার জন্য কোন মানুষের পরিচয়ে বা কোম্পানির পরিচয়ে একটি প্লে কনসোন অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হয়। একই সাথে ওয়েবসাইটের জন্য প্রতিবছর হোস্টিং এবং ডোমেইনের জন্য নির্ধারিত অর্থ পেমেন্ট করতে হয়। তবে যদি এর পেছন্টে কেউ না থাকে তাহলে এটি কে পে করে।

৬. যদিও এখানে রোবোটিক ভাবে অনেক ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রন করা হয়। তবেও অনেক বড় বড় কোম্পানি হ্যাকিং এর কারনে ধংশে পরিনিত হয়। তবে এই ফরসেজ যদি কোন কোম্পানি ভিত্তিক না হয় তাহলে তাকেও কেন হ্য়াক করে সব লুটে নেওয়া হয় না। ( সকল কোম্পানি তাদের তথ্য হ্যাক থেকে বাচানোর জন্য ভালো সিকিউরোটির জন্য অনেক অর্থ ব্যায় করে।)

৭. যেহেতু ইন্টারনেটের সকল কিছুই হ্যাক করা সম্ভব তাই এটাও সত্য যে ফরসেজ যদি আপনার জানা সকল আজব তথ্যের মতো হয়েও থাকে তবুও এটি হ্যাক হওয়ার পরে ধংশ হয়ে যাবে।

৮. অনেকে বলবে যদি ফরসেজ হ্যাক হয়, তাহলে তার সকল কার্যক্রোম বন্ধ হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে হ্যাকাররা টাকা উত্তোলোন করবে কোথা থেকে, কিন্তু দেখুন যে সকল ব্যাংক হ্যাক করা হয়, তারা তো কোন ভাবেই টাকা আটকাতে পারে না। এভাই হ্যাকার রা ঠিকই নিতে সক্ষম। ( ফরসেজ অল্প অল্প টাকার লেনদেন হয়, সেজন্য তেমন এর পেছনে সময় দিবে না হ্যাকার রা।)

৯. যদি হ্যাক হলে কার্যক্রম বন্ধই থাকে তাহলেও কিন্তু এটি বন্ধ হয়ে যাবে। অথবা বন্ধ না হলেও আপনার টাকা তখন ঠিকই আটকে যাবে।

১০. অ্যাকাউন্ট কন্ট্রোল এবং ইনভেস্ট ও উত্তলোন এর জন্য পর্যালোচনা করার জন্য অবশ্যই লোকের প্রয়োজন হয়। যদি বলে এটিও সয়ংক্রিয় ভাবে করা হয়। তাহলে প্রশ্ন এই সয়ংক্রিয় প্রসেস করার পেছনে কোন মানুষ বা কোম্পানি আছে সেই কোম্পানি ফরসেজ এর মালিক হবে।

এরকম আরো শত শত উদাহরনের মাধ্যমে প্রমাণ করা যায় যে ফরসেজ একটি কোম্পানি ভিত্তিক ইনকামক প্লাটফর্ম। আর এটি ব্লকচেইনের আয়োত্বাধীন কাজ করে। তবে এটি কখনো কি স্কাম করবে কি না সেটি জানা সম্ভব নয়। একই সাথে এটি কবে আর কিভাবে বন্ধ হবে সেটিও জানা সম্ভব নয়। হতে পারে কোম্পানি পর্যাপ্ত লাভবান হলে এটি অনিদৃষ্ট কাল পর্যন্ত চালিয়ে যেতে পারে। তবে ফরসেজ এর বন্ধ হওয়ার করন ও সময় সমন্ধে আমাদের ভিন্ন পোস্ট আছে। আবার ফরসেজ স্কাম করতে পারে কিভাবে সেটিও দেখে নিতে পারেন।

তথ্যমূলক নিউজ পেতে আমাদের সাইটের নটিফেকেশন চালু করে রাখতে পারেন এবং আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে ফলো করে রাখতে পারেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here