Saturday, January 18, 2025
No menu items!
Homeধর্মজান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত মহিলা সাহাবীদের নাম

জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত মহিলা সাহাবীদের নাম

শান্তির ধর্ম ইসলামের নির্দেশিত পথে জীবন পরিচালনা করা প্রতিটি মুসলমান চায় পরকালে জান্নাতি হতে।ইসলাম ধর্মের মহিলা পুরুষ প্রত্যেক ব্যক্তিরাই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ইবাদত করেন। আল্লাহ ইবাদতকারী ব্যক্তির উপর সন্তুষ্ট হয়ে জান্নাত দান করেন।

পবিত্র কোরআন হাদিসে বর্ণিত আছে,হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আল্লাহ তাআলার হুকুম পালনে তার ইবাদত করতেন তখন তার সাথে তার সাহাবীগণ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ইবাদতের উদ্দেশ্যে মশগুল থাকতেন ।

হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর জীবদ্দশায় অনেক পুরুষ ও মহিলা সাহাবী ছিলেন,যারা প্রিয় নবীকে ইসলাম প্রচারে সাহায্য করেছেন। আল্লাহর রাস্তায় আমল ইবাদতে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। আল্লাহ দুনিয়াতেই সেই সকল সাহাবীদের জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন। মহানবী সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর পুরুষ এবং মহিলা অনেক সাহাবী ছিলেন।

মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনকালে যে সকল মহিলারা ইসলাম গ্রহণ করেছে এবং একই সাথে পরিপূর্ণ ঈমান সহিত ইসলাম পালন করেছে পাশাপাশি রাসূল (সাঃ)কে নিজ স্বচক্ষে দেখেছেন,মূলত তাদেরকে মহিলা সাহাবী বলে। উচ্চপদস্থ মহিলা সাহাবীগণ মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে দ্বীনি ইসলাম প্রচার করতেন।

তারা ওইসব সম্ভ্রান্ত নারী যারা ইসলামের মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছে। মহিলার সাহাবীদের প্রায়শই প্রজ্ঞা, জ্ঞান, বুদ্ধি ,সাহস, বীরত্ব, সততা,স্থিতিস্থাপকতা এবং আনুগত্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ইসলামের প্রতি তাদের মহৎ ত্যাগের ফলে তারা জান্নাতে উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন স্থান অর্জন করেছে।

ইসলাম ধর্মে মহিলা সাহাবীরা অনেক মর্যাদার অধিকারী ছিলেন। মহিলা সাহাবীরা দরিদ্র, অসহায় ও এতিমদের সাহায্য করার জন্য কাজ করেছিলেন।অনেক মহিলা সাহাবী মানুষের কল্যাণে অনেক ভালো কাজ করেছেন বিনিময়ে তারা জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছেন।

জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত মহিলা সাহাবীদের নাম

কিছু হাদিস থেকে জানা যায়, কিছু মহিলা সাহাবী ছিলেন যাদের জান্নাতের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছিল।আল্লাহ এ সকল সাহাবীদেরকে সরাসরি জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান করেছিলেন। এই সাহাবিরা আখিরাতের কথা চিন্তা করে সব সময় আল্লাহর ইবাদত ও আনুগত্য করতেন। সবসময় ভালো কাজ এবং সঠিক পথে চলার জন্য আল্লাহ তাআলা খুশি হয়ে জান্নাতের ঘোষণা দিয়েছেন।

জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত মহিলা সাহাবীদের মধ্যে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হলো, যারা ঈমান,ত্যাগ এবং রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর প্রতি অনুগত্যের জন্য বিশেষ মর্যাদা প্রাপ্ত হয়েছেন। তাদের নাম নিচে দেওয়া হল:

  • খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ (রাযি)
  • ফাতিমা বিনতে মোহাম্মদ (রাযি.)
  • আয়েশা বিনতে আবু বকর (রাযি.)
  • উম্মে সোলাইম (রা.)
  • সুমাইয়া বিনতে খায়াত (রা.)
  • আসিয়া বিনতে মুজাহিম (রা.)
  • উম্মে হারাম বিনতে মিলহান (রা.)

খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ (রাযি) এর

খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ (রাযি): এই নামের অর্থ ছোট পাথর বা মর্যাদাপূর্ণ মহিলা। খাদিজা ছিলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রথম স্ত্রী এবং ইসলামের প্রথম মহিলা মুসলিম। তিনি তার ইমান, ত্যাগ এবং রাসুলুল্লাহর প্রতি অগাধ সমর্থনের জন্য বিশেষভাবে সম্মানিত ।

নবী (সাঃ) এর প্রচারণায় অর্থনৈতিক ও সহায়তা প্রদান করেন। তিনি দরিদ্র ও মিসকিনদের প্রতি সহানুভূতিশীল ও সাহায্যকারী ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নিজে তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছিলেন।

ফাতিমা বিনতে মোহাম্মদ (রাযি.)

ফাতিমা বিনতে মোহাম্মদ (রাযি.): এই নামের অর্থ ছোট করা, বিচ্ছিন্ন করা অথবা মুক্তিদাতা। ফাতেমা ছিলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রিয় কন্যা। তিনি তার ধার্মিকতা, বিনয় এবং রাসূলুল্লাহর প্রতি ভালোবাসার জন্য পরিচিত।

তিনি নারীদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দুস্থ ও এতিমদের প্রতি তিনি সহানুভূতিশীল ছিলেন। তিনি ও জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত হয়েছিলেন।

আয়েশা বিনতে আবু বকর (রাযি.)

আয়েশা বিনতে আবু বকর (রাযি.):এই নামের অর্থ প্রাণবন্ত বা সুন্দরী। আয়েশা রাযি. মহানবী (সাঃ) প্রিয় স্ত্রী তিনি ইসলামী জ্ঞান ও হাদিস সংকলনের ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন। তিনি উম্মুল মুমিনীন নামে পরিচিত। জ্ঞান ,বুদ্ধিমত্তা ও বিচক্ষণতার জন্য তিনি বিখ্যাত ছিলেন। তিনি নারীদের শিক্ষা এবং অধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

উম্মে সোলাইম (রা.)

উম্মে সোলাইম (রা.): আবু তালহা রা. এর স্ত্রী ছিলেন। তিনি ‘সাহাবীদের মা’ নামে পরিচিত। সাহাবীদের মধ্যে শিক্ষা ও জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। দাতব্য ও সমাজ সেবামূলক কাজের সক্রিয় ছিলেন। তিনি ধৈর্য ও সহনশীলতার অসাধারণ পরিচয় দিয়েছেন।

সুমাইয়া বিনতে খায়াত

সুমাইয়া বিনতে খায়াত: মেয়ের ইতিহাসে তিনি প্রথম শহীদ নারী। তিনি ইসলাম গ্রহণের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করে অনুপ্রেরণা জাগিয়েছিলেন। তিনি নারীদের সাহস ও আত্মত্যাগের অনন্যা দৃষ্টান্ত ছিলেন। নির্যাতনের মুখেও তিনি ইসলামে অটল ছিলেন।

আসিয়া বিনতে মুজাহিম

আসিয়া বিনতে মুজাহিম: এই নামের অর্থ নিরাময়কারী বা শক্তিশালী। আসিয়া ছিলেন ফেরাউনের স্ত্রী(মুমিনা ফিরাউন)। যদিও তিনি সাহাবী নন ,তবে কুরআনে তার ঈমানের উদাহরণ উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি ফেরাউনের অত্যাচার সত্ত্বেও এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে। তিনি নির্যাতনের মুখেও সত্যের পথে অটল ছিলেন।

উম্মে হারাম বিনতে মিলহান

উম্মে হারাম বিনতে মিলহান: এই নামের অর্থ প্রিয়তমার জননী। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর স্ত্রীদের মধ্যে একজন। তিনি ইসলামের প্রাথমিক দিকের মুমিনদের মধ্যে একজন ছিলেন। তিনি মদিনায় হিজরতকারীদের সাহায্য করেছিলেন।

বিশেষ কথা

এছাড়া ও অনেক মহিলা সাহাবী তাদের ঈমান ও ত্যাগের জন্য জান্নাতে সুসংবাদপ্রাপ্ত হয়েছেন। আল্লাহর তাদেরকে অনুকরণীয় আদর্শ হিসেবে আমাদের সামনে উপস্থাপন করেছেন। ইসলামের ইতিহাসে মহিলা সাহাবীদের অবদান অপরিসীম।

আপনি ইসলাম ধর্ম সমন্ধে আরো সুন্দর সুন্দর তথ্য পেতে বাংলা ভোর অনলাইন পত্রিকার নটিফেকেশন চালু করে রাখতে পারেন। সেই সাথে আপনি নিচের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপেও জয়েন করে রাখতে পারেন। বাংলা ভোর অনলাইন পত্রিকাকে একটি ইসলামিক পত্রিকায় পরিনিত করতে চাই, তাই আমাদের নিয়মিত ভিসিটর হয়ে আমাদের সাথে থাকুন।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

WhatsApp Group Join Now
RELATED ARTICLES

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সম্প্রতি খবর

- Advertisment -