বাংলাদেশের ছেলেদের কাছে বর্তমান সময়ে বেশ জনপ্রিয় একটি কাজ হয়ে উঠেছে অনলাইন ইনকাম। বেশ অতিত থেকে চলে আসলেও সম্প্রতি সবার কাছে টেলিগ্রাম বা অন্যান্য ছোট ছোট কাজ করে সামান্য টাকা পাওয়ায় এটি বর্তমানে চরম আকার ধারন করেছে।
বাংলা ভোর অনলাইন পত্রিকায় আজ আমরা বিশেষ ভাবে ক্যাসিনো গেম অনলাইন এর ব্যাপারে কথা বলবো। এটি আমাদের জন্য কতটা ভয়াবাহ হচ্ছে, আর এই অবৈধ কাজ থেকে আমরা বেরিয়ে আসার বদলে আরো বেশি ধাবিত হওয়ার সকল কারন ও উল্লেখ করবো।
ক্যাসিনো গেম অনলাইন আসলে কি
ক্যাসিনো গেম অনলাইন বলতে শুরুতেই আপনারা বুঝতে সক্ষম যে এখানে কোন একটি গেম এর থেকে ইনকাম করার কথা বলা হয়েছে। তবে সেটি থেকে কিভাবে আয় করে সেটা এখানকার মুল বিষয়।
ক্যাসিনো শব্দটি ইতালীয় ভাষা থেকে এসেছে। এর মানে অনেকগুলো হতে পারে, তার মধ্যে অন্যতম হলো ছোট ঘর, ভিলা, খেলার ক্লাব। এখানে খেলার ক্লাব হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
সাধারনত আমরা জানি, একটা খেলার ক্লাবে বিভিন্ন ধরনের খেলার আয়োজন বা প্রয়োজনীয় সকল জিনিস থাকে। তবে সাধারনত আমাদের দেশের খেলার ক্লাব এবং বিদেশের খেলার ক্লাব ভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। কেননা আমাদের দেশের ক্লাব অনেক ছোট একটা ঘর হলেও বিদেশিদের ক্লাব বড় এবং বিভিন্ন খেলার আয়োজন করার মতো জায়গা নিয়ে হয়ে থাকে।
সেই ভিত্তিতে ক্যাসিনো শব্দেও অনেক খেলার জায়গাকে বোঝানো হয়েছে। আর সাধারনত খেলা ঘরে খেলার প্রেমিকরাই থাকে।
ঠিক সেভাবে এই ক্যাসিনোতেও খেলার প্রেমিকরাই থাকে, তবে একটু ভিন্ন ভাবে। আর এই ক্যাসিনো নামক অ্যাপ বা ওয়েবসাইটগুলোতে সব ধরনের অনলাইন এবং অফলাইন গেমের বিশেষ ব্যবস্থাপনা করা হয়ে থাকে।
উদাহরন সরুপ, আমরা লুডু গেমটা মোবাইল বা মোবাইলের বাইরে কাগজেও খেলতে পারি, তার সাথে ক্রিকেট – ফুটবল সহ ইত্যাদি আমরা মাঠেই খেলি। তবে আবার ফ্রিফায়ার- পাবজির মতো গেমগুলো আমরা অনলাইনেই খেলি, এগুলো বাস্তব জীবনে খেলা সম্ভব নয়।
সেখান থেকে বলা যায় এই সকল গেমই ক্যাসিনোতে থাকে। আর ক্যাসিনো গেম যারা খেলে তারা মুলতো সেখানে টাকা লোড করে বা ব্যালেন্সে টপ আপ করে। যেভাবে সাধারনত আমরা মোবাইল রিসার্চ বা বিকাশ ব্যলেন্স করে থাকি।
এর পরে তারা সেখানে খেলায় বাজি ধরে, এবং যে বাজিতে জিতে যায় সে সকল টাকা পায়। তবে ক্যাসিনো বোর্ড বা অ্যাপ সেখান থেকে একটা কমিশন কেটে রাখে।
এই মাধ্য়মটা যখন বিশেষ কোন খেলা শুরু হয় (IPL,BPL, ASIA CUP, FIFA CUP OR ETC) তখন এই খেলাগুলো সেই অ্যাপের মধ্যে সরাসরি দেখানো হয়ে থাকে। আর নিচে বেট করার বা টাকা ধরার বিশেষ সুবিধা করে দেওয়া হয়ে থাকে। তখন যারা ক্যাসিনো গেম অনলাইন থেকে ইনকাম করে বা বাজি খেলে, তারা সেখানে পক্ষ নিয়ে বাজি ধরে। ফলে দেখা যায় সারা বিশ্ব থেকেই অনেক মানুষ এই অ্যাপে বাজি ধরার কারনে ২ পক্ষেই লোক থাকে।
অতপর যে পক্ষ জিতে যায়, সে পক্ষে টাকা বাজি রাখা লোকেরাও জিতে যায়। এখানে আরো অনেক ভাব হয়ে থাকে, আমি সবার জন্য সংক্ষিপ্ত করে বোঝানোর চেষ্টা করেছি।
ক্যাসিনো গেম অনলাইন থেকে টাকা উঠানোর উপায় কি
এখানেই অনেক কিছু নির্ভর করতে শুরু করেছে। দেখা যায় সহজেই বিকাশ নগদ বা ইত্যাদি বাংলাদেশি লেনদেন মাধ্যম ব্যবহার করেই টাকা পাঠানো এবং উঠানো যায়। ফলে দিন দিন মানুষ সহজে এখানে লেনদেন করতে পারায় এর দিকে ধাবিত হচ্ছে। আবার বিশেষ কিছু অ্যাপ বা ওয়েবসাইটের জন্য ভিন্ন কোন ক্রিপ্টো সিস্টেম ব্যবহার করতে হয় বলে সেখানে মানুষ কম বাজি ধরে।
ক্যাসিনো গেম অনলাইন এর প্রচলন বেড়ে যাওয়ার কারণ কি
সাধারনত কেউ একজন যখন এই অ্যাপে বিশেষ সুযোগ সুবিধার বিজ্ঞাপন দেখে সেখানে সাইনআপ করে এবং সেখান থেকে কোন সামান্য বোনাস পায় আর সেগুলো দিয়ে বাজি ধরে বেশি টাকা পেয়ে হাতে নিতে পারে, তখন সেখানে সে আরো টাকা পাঠাতে চায়।
আবার সহজ মাধ্য়মে টাকা লেনদেন করতে পারায় তার টাকা পাঠানোর জন্য বিশেষ কোন ঝামেলা পোহাতে হয় না। এছাড়াও বাংলাদেশের টপ খেলোয়াড়, জনপ্রিয় অভিনেতা এবং অভিনেত্রি সহ অনেকেই অনেক ভাবে এই ক্যাসিনো গেম অনলাইন এর প্রচার করে।
বাংলাদেশের কিছু ইউটিউবার সাভাবিক ভালে ইউটিউব বা অন্যান্য সোস্যাল মিডিয়ার নিয়ম মেনে কাজ করার পরেও তাদের বিভিন্ন সময়ে জরিমানা সহ জেল হয়েছে। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে শত কোটি টাকা সেখানকার দ্বায়ীত্বশীলরা খেয়ে ফেলার পরেও সেখানে ক্যাসিনো গেম অনলাইন এর বিজ্ঞাপন ব্যবহার করতো।
তাছাড়া জনপ্রিয় খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান, জনপ্রিয় অভিনেত্রি পরীমনি এবং অপু বিশ্বাসের এখনো চুক্তি রয়েছে কয়েকটি ক্যাসিনো গেম অনলাইন এর কম্পানির সাথে।
এখানে দেখা যায়, কন্টেন্ট ক্রিয়েটর রা সামান্য টাকার জন্য এক টুকরা বিজ্ঞাপন দিলে তার জন্য তাকে আইনের আয়ত্বে আনা হয়। তবে এটা দরকার ছিল, তাই আনা হয়েছে। তবে প্রশ্ন তো যখন সাকিব, অপু, আর পরিমনী বা তাদের মতো কেউ সেই কম্পানিগুলোর জন্য বিশেষ সময়ের বড় চুক্তিতে সই করে, তখন তার কি কোন আইনের শাস্তি হওয়ার প্রয়োজন নেই।
তবে কখনোই তাদের কোন শাস্তি না হওয়ার কারন ও যথারিতি রয়েছে। সাকিব বাংলাদেশের আওয়ামিলিগ সরকারের মননিত এমপি। আবার অপু বিশ্বাস তো অতিতের থেকেই এই সরকারের ভালোবাসার বস্তু, তার সাথে যদি পরিমনীর দিকে দেখা হয়, সেও সরকারের পরিবারের জন্য নির্মিত বিশেষ সিনেমায় মুল পর্যায়ে অভিনয় করে। তাহলে এদের কি আর কখনোই কিছু বলা সম্ভব বলেন।
ক্যাসিনো গেম অনলাইন এর ক্ষতিকর দিকগুলো
বাংলাদেশ সহ বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই এই বিশেষ প্লাটফর্মের দেখা মেলে। সকল দেশের লোকেরাই এই বিশেষ অ্নলাইন বাজি বা বেটিংয়ের সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে। তার সাথে সম্প্রতি আমি যে কারনগুলো বলেছি, সেগুলোর জন্য আমাদের দেশের মানুষগুলো অনেক বেশি জড়িয়ে যাচ্ছে। তবে এখান থেকে এদের ভিড়িয়ে আনা উচিৎ এবং আমাদের ই দ্বায়ীত্ব।
এই সকল অসভ্য কাজের জন্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অল্প বয়সী ছেলেদের দেখা যায়, যদিও মিডিয়াম বয়সী ছেলে বা অল্প বয়সী মেয়ে এবং মিডিয়াম বয়সী মেয়েদেওর ও দেখা যায়। ছেলেরা যখন বেশির ভাগ ই এই কাজের দিকে ঢুকে যাচ্ছে, তখন কর্মক্ষেত্রে তাদের মন বসে না তার সাথে পড়ালেখা ও অনেকেই ছেড়ে দেওয়ার মতো।
সামান্য সময়ে কিছু টাকা পেয়ে যদিও পড়ালেখার ক্ষতি করে, কোন একটা সময়ে এসে তাদের এই অসৎ এবং টার্গেট মুক্ত ক্যারিয়ার হারিয়ে যেতে পারে। তার সাথে সকল টাকা মুহুর্তেই লস করে ফেলতে পারে। তখন এই ছেলেগুলো বেকারের মতো হয়ে যাবে তার সাথে তারা নিজেদের সম্পদও হারিয়ে ফেলবে।
বিশেষ করে, প্রতিদিনের হার জিত এই খেলায় একটি সাধারনতম অংশ। এই খেলায় একই দিনে বার বার হার জিত আসতে পারে, সেখানে যদি কেউ বেশিবার হেরে যায়, তাহলে তার মাথায় অনেক প্রেশার থাকে, ফলে পরিবার সহ সমাজের মানুষের সাথে তার ব্যবহার ও খারাপ হতে থাকে। ফ্যামিলিগত ভাবেও তারা বেশি শুখি হতে পারে না।
সাধারনত ফ্রিল্যান্সিং বা অনলাইনে অন্য কোন কাজ করলে যে পরিমানে ইনকাম করা যায়, তা এই কাজে যায় না। তার উপরে এখানে প্রতিমুরুর্তেই হেরে যাওয়ার বিশেষ ভয় হৃদয়ে ঢুকে যায়।
চুরি, ডাকাতির মতো কর্মেও অনেকে বাজি খেলার টাকা জোগাড় করার জন্য ধাবিত হয়। কারন বার বার হেরে যেতে যেতে অনেক সময় হাত পুরো খালি হয়ে যায়।
নিজেদের দেশের টাকাই বিভিন্ন ভাবে এক জনের থেকে অন্য জনের কাছে হস্তান্তর হয়ে থাকে, তার সাথে মাঝখান থেকে ক্যাসিনো গেম অনলাইন এর কম্পানিগুলো কমিশন কেটে নেয়।
অনেক ক্ষেত্রে অনেক কম্পানি লোভ দিয়ে ইভেস্ট করানোর পরে, টাকা আটকে দেয় বা পালিয়ে যায় সকল টাকা নিয়ে। এমন ঘটনা বার বার দেখা গেছে। এখানে ক্যাসিনো গেম অনলাইন এর ইনভেস্ট সিস্টেমে সাধরনত তেমন ডোকোমেন্টস থাকে না। তাই এই বিষয়ে মামলা করেও লাভ নেই। টাকা পেলেও সরকার পাবে।
আরো বিশেষ বিশেষ কারনে এই ক্যাসিনো গেম অনলাইন ক্ষতির কারন হয়ে দাড়ায়। তাই আমাদের নতুন প্রজন্মকে এই ক্ষতিকর কম্পানিগুলো থোকে বাচাতে হবে। সে উদ্দেশ্যেই আমরা এই নিউসটা লেখেছি।
জনপ্রিয় কিছু ক্যাসিনো গেম অনলাইন
জনপ্রিয় কিছু ক্যাসিনো গেম অনলাইন এর লিস্ট থেকে সবগুলোকে চিনে রাখুন। আপনার কাছের কোন মানুষকে এই লিস্টে থাকা কোন অ্যাপ বা ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে দেখলে তারাতারি সতর্ক করে দিবেন।
সাধারনত বেশিরভাগ ই ওয়েবসাইট এবং ব্যবহারকরীদের সুবিধার জন্য মোবাইল অ্যাপ করে এবং সেখানে ক্যাসিনো গেম অনলাইন এর ব্যবস্থা করে। তবে যে নামগুলো দিব, সেগুলো বেশি জনপ্রিয় তাই তাদের অ্যাপ এবং ওয়েবসাইট উভয়টাই রয়েছে।
- babu88 ক্যাসিনো
- jeetbuzz ক্যাসিনো
- mcw ক্যাসিনো
- মেগা ক্যাসিনো
- jaya9 ক্যাসিনো
- বাজি লাইভ ক্যাসিনো
আরো ইত্যাদি রয়েছে। আমি আশা করি, এই নিউসটা থেকে আপনারা বিশেষ সতর্কতা পাবেন। আমাদের নতুন প্রজন্মকে এই ক্ষতিকর বিষয়ের থেকে দুরে রাখার চেষ্টা করবেন। আমরা এই বিশেষ সতর্কতার জন্য ই এই পোস্টটি করেছি।
আমাদের এই সাইটের সকল নিউজগুলো সবার আগে পেতে আমাদের হোয়াটস্যাপে ফলো করে রাখুন। আমাদের অমনলাইন ইনকাম এবং টেলিগ্রামের নতুন নতুন সকল ইনকাম ফ্রিমাইনিং সাইটের নিউস পেতে আমাদের টেলিগ্রামেও ফলো করতে পারেন। এবং আমাদের সকল পোস্ট গুগল নিউস থেকেও পেতে পারেন, সেজন্য গুগল নিউসে ফলো করে রাখুন।