আসসালামু আলাইকুম। বাংলা ভোর Bangla Vor অনলাইন নিউজ পেপার পত্রিকায় আপনাদের সাগতম। সাথে বাংলা ব্লগ পোস্ট লেখার জন্য আমদের সাথে যোগাযোগ করতে পারন।
আজ আমরা পোস্ট করবো ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার বিষয়টি নিয়। এখন গ্রীষ্মের শেষে বর্ষা চলে। সাধারনত গ্রীষ্ম আর বর্ষা কালেই ডেঙ্গু রোগের ছড়াছড়ি দেখা যায়। বাংলা ভোর অনলাইন নিউজ পেপার থেকে আপনারা সবসময় ই সময় উপযোগী সকল ধরনের পোস্ট পাবেন। তাই এই সাইট টা পিন করে রাখুন। এবং আমাদের সোস্যাল মিডিয়াগুলোতে ফলো করে রাখুন।
ডেঙ্গু রোগের কারণ ও লক্ষণ বা ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ
ডেঙ্গু একটি রোগের নাম। এই রোগটি সাধারনত এডিস নামক মশার কারনে হয়ে থাকে। আমি আশা রাখি এই বিষয়ে সবাই ই কম বেশি জানেন। তাই এদিকে আর লম্বা করবো না।
আমাদের মুল বিষয় এখানে, আমরা ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হলে কি কি লক্ষন বুঝতে পারবো। সাধারনত মানুষের শরিরে বড় ধরনের কোন রোগ বেশি পরিমানে বিস্তার করে ফেললে, আমরা রোগির গায়ে জ্বর দেখতে পাই। ঠিক ডেঙ্গু রোগে বা ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও আমরা আক্রান্ত ব্যাক্তির গায়ে জ্বর অনুভব করে থাকি। এই জ্বরকেই আমরা ডেঙ্গু জ্বর বলি।
ডেঙ্গু ভাইরাসে বা রোগে আক্রান্তু ব্যাক্তির জ্বরের সাথে আরো কিছু লক্ষন হলোঃ
- জ্বর ১০২ ডিগ্রি থেকে ১০৫ ডিগ্রির মধ্যে থাকে,তবে ক্ষেত্র বিশেষ কম বেশি দেখা যায়
- মাথার বিভিন্ন অংশবিশেষ বা পুরো মাথা ব্যাথা
- বমি হতে পারে
- চোখের ভেতরের অংশে ব্যাথা করতে পারে
- হাত পা এবং শরিরের বিভিন্ন স্কিনে লালচে দাগ দেখা যায়
- সাভাবিকের থেকে বেশি ঠান্ডা অনুভোব হতে পারে।
- ক্ষুধা কমে যায়
- মুখের রুচি কমে যায়
- রক্ত চলাচল কমে যায়
- শরিরে ও হাত পায়ের ভেতরে ব্যাথা অনুভব হয়
অতিরিক্ত জ্বর হলে বা ডেঙ্গুরোগ তীব্র আকার ধারন করলে এটা আরো ভয়াবাহ হয়ে থাকে। আমরা উপরের লক্ষনের কিছু পরিবর্তন দেখতে পাই। এবং সাথে সাথে আরো কিছু লক্ষন যুক্ত হতে পারে। সেগুলো হলোঃ
- প্রচন্ড পেটে ব্যথা
- ঘন ঘন বমি হওয় বা বমি আসা
- দাঁতের গোড়া বা নাক দিয়ে রক্ত বের হওয়া
- প্রশাব এবং পায়খানাতে রক্ত বের হওয়া
- ঘন ঘন পায়খানা হওয়া
- নিশ্বাস ঘন হয়ে যাওয়া
- শরিরে ব্যথা , অসস্থি বোধ সহ ইত্যাদি
উক্ত কারনগুলোতে বুঝতে পারেন কেউ ডেঙ্গু জ্বর বা ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত। তবে এর সাথে আরো কিছু যোগ হতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে এগুলো থেকে অল্প পরিমানের লক্ষন প্রকাশ পায়। তবে দ্রুত ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিৎ।
ডেঙ্গু রোগের জীবাণুর নাম কি
ডেঙ্গু আসলে একটি ভাইরাসের ই নাম। এই ভাইরাসটি বা রোগটি সাধারনত এডিস মশার কামড়ে হয়ে থাকে। এই জীবানু বা ভাইরাস টি ইংরেজিতে বলা হয় থাকে Dengue virus এবং এর সংক্ষিপ্ত নাম প্রকাশ করা হয় (DENV) দ্বারা। যা সাধারনত ডেঙ্গু ভাইরাস কে ইঙ্গিত করে। এই রোগ বহু অতিত থেকে মানুষের অন্যতম সমস্যার কারন হলেও, সম্প্রতি আমাদের কাছে ডেঙ্গু জ্বর নামে প্রকাশ পেয়েছে।
অঞ্চল ভিত্তিক ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় ডাকা হয়ে থাকতে পারে এই রোগটি চিহ্নিত করার জন্য। তবে এর বিঞ্জানিক নাম ই হলো ডেঙ্গু ভাইরাস।
২য় বার ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ
প্রতি বছর বেশ কিছু মানুষ আমাদের সমাজ থেকে চিরতরে হারিয়ে যায় এই ডেঙ্গুজ্বর বা ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে। এই ভাইরাসটি সকল মৃত্যুগামি ভাইরাসের চেয়ে একটু ভিন্ন রুপে আসে। সাধারনত বড় বড় রোগের জীবানুগুলো শরিরে একবার বিস্তার করতে সক্ষম যা ভালো হয়ে গেলে, দ্বিতীয় বার সমাভবনা থাকে না।
তবে ডেঙ্গু এমন একটি রোগ যা একাধীক বার হতে পারে। এবং প্রতিবার ই ভয়াবাহতা তুলনা মুলক বেড়ে যায়। দ্বিতিয়বার বিশেষ কোন লক্ষন প্রকাশ করে না। প্রথম বারের মতোই দ্বিতীয় বার ও একই লক্ষন প্রকাশ পায়। তবে ভয়াবাহতা বেশি। তার সাথে দেখা যায় জ্বর ভাব থাকলেও ৩-৫ দিনের মধ্যে বাকি লক্ষনগুলো প্রকাশ পায়।
সাধারনত বাংলাদেশের তথ্য় সুত্র অনুযায়ী ১৫-৪০ বছরের বয়সী লোকজোন ২য় বারের মতো ডেঙ্গুতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেে। তার সাথে ২য় বার আক্রান্ত হলে লিভার বেড়ে গিয়ে মৃত্যুর মতো আশংকা বেশি থাকে।
২য় বার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে , বিশেষ সচেতনতা মেনে চলতে হবে। দেরি না করে ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রনের জন্য সেলাইন ব্যাবহার করা যেতে পারে। ডাক্তারের দেওয়া সঠিক পরামর্শ মেনে চলতে হবে। অভিঞ্জ ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিতে হবে।
শিশুর ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
ডেঙ্গু রোগের প্রভাব শিশুদের উপর ও প্রচুর বিরজ করতে দেখা যায়। প্রতি বছর কয়েক শত শিশু ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে থাকে। শিশুর ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার বলতে সবার প্রায় একই রকমের সমস্যা দেখা যায়। আর সবার জন্য সমাধান ও একই রকমের।
বিশেষ করে শিশুদের জন্য ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে বেশি বেশি তরল জাতীয় খাবর খাওয়াতে হবে। তা না হলে তরল অভাবে ভয়াবাহ লক্ষনে পরিনিত হতে পারে। এবং জ্বর বা আশেপাশে কারো ডেঙ্গু আক্রান্ত দেখলে বিশেষ ভাবে শিশুকে সেবা করতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
ডেঙ্গু জ্বর কত দিন থাকে
অষুধ না খেলে ডেঙ্গু জ্বর মৃত্য পর্যন্ত থাকে। তাই ডেঙ্গু রোগ মৃত্যুর কারন হওয়ার আগেই তার উপযুক্ত চিকিৎসা নেওয়া উচিৎ। প্রতিবছর ডেঙ্গুজ্বরে মৃত্যু হওয়া লোকের মাত্র ১% মানুষ চিকিৎসা করার পরেও মারা যায়। মানে সুস্থ হয় না। তবে হয়তো সঠিক সময়ে উপযুক্ত চিকিৎসার অধীনে আসতে পারলে এই মৃত্যুর হার আরো কমানো সম্ভব হবে।
সাধারনত ৫-৭ দিন পরে জ্বর কমে সাভাবিক অবস্থাতে আসলেও এই জ্বর আবার ঘুরে আসতে পারে। তাই চিকিৎসকদের দেওয়া পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে, তাহলে ডেঙ্গু রোগ থেকে চির মুক্তি পাওয়া যায়। তবে আবর ভাইরাসে আক্রান্ত হলে রোগ আবার নতুন করে আসবে।
ডেঙ্গু জ্বর হলে কি খেতে হবে এবং ডেঙ্গু জ্বর হলে করণীয়
ডেঙ্গুজ্বর হলে কিছু জিনিস করনীয় আছে, আবার কিছু জিনিস বর্জনীয় আছে। আমি আশা করি আপনারা উপরের সম্পুর্ন পোস্ট টি পড়ার পরেই এই অংশে এসেছেন। না পড়ে আসলে পড়ে আসলে ভালো হবে।
সাধারনত ডেঙ্গু রোগ তিন ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে, “A” “B” “C” তাই এর জন্য কিছু ভিন্নতা রয়েছে। আবার খাবাররের ও কিছু বিধি নিশেধ রয়েছে। তাই প্রাথমিক ভাবে সকল রুগির জন্য করনীয় হলোঃ
- বেশি বেশি পানি পান করা
- বেশি করে বিশ্রাম করা
- ক্ষুধা অনুযায়ী খাবার খাওয়া
- শরিরে পুষ্টির অভাব যেন না হতে পারে
- তাজা ফলের জুস
- তরল জাতীয় খাবার
- তবে বাহিরের খাবর থেকে দুরে থাকতে হবে। উদাহরনঃ জুস, বিস্কিট, বাহিরে বানানো জুস সহ ইত্যাদি
- দেশি মুরগী, মুরগীর ডিম বা এই জাতিয় প্রটিন খাওয়াতে হবে
- শাক-সবজি খেতে পারে
তার সাথে ডেঙ্গু রোগীর জন্য বর্জনীয় খাবর হলোঃ
- চর্বি জাতীয় খাবার
- বাহিরের সকল ধরনের খাবার
- নেশা জাতীয় সকল জিনিস
- কাজা সবজি সহ এই জাবতীয় খাবার যা হজম করতে সমস্যা
- শক্ত জাতীয় খাবার যা হজম করতে সমস্যা আবার তরল ঘাড়তি হতে পারে।
- চা, কফি , কোমল পানীয় সহ এই ধরনের খাবার শরীরের দুর্বলতার কারন হতে পারে।
ডেঙ্গু জ্বর কি ছোঁয়াচে রোগ
উত্তর হবে না। ডেঙ্গু জ্বর বা ডেঙ্গু রোগ এই ভাইরাসটি কোন ছোঁয়াচে রোগ নয়। তবে বিশেষ সতর্কতা হিসেবে রোগীর গায়ের অন্যান্য জীবানু বা রোগ শরিরের দুর্বলতার উপেক্ষা করে আক্রমন আনতে পারে, যা খাবার বা অন্য কিছুর উপর ভিত্তি করে ছড়াতে পারে।
তার সাথে আবার ডেঙ্গু রোগের বিশেষ সতর্কতা হলো, এই ভাইরাসটি কারো শরিরে প্রবেশ করে ফেললে তার গায়ে অন্য মশা কামড় দিয়ে রক্ত খেলে বা কামড় দিলে , কামড় দেওয়া মশাটি যদিও এডিস মশা নয়। তবুও সাধারন মশাটির শরিরে ডেঙ্গু রোগ ঢুকে যাবে। সাধারন মশাটি ও তখন ডেঙ্গু রোগের বাহক হবে। এই মাধ্যমে ডেঙ্গু মশা কম হলেও সাধারন মশার মাধ্যমে এই রোগটি ছড়াতে সক্ষম।
তাই বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। সব ধরনের মশা থেকে দুরে থাকা উচিৎ। আর মশা সহ সব ধরনের জীবানু উৎপান্নকারী বজ্র ,ময়লা থেকে নিজেদের বাচাতে হবে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও প্রতিকার
উপরের দিকে প্রায় আমি সব বিষয়ে ই আলোচনা করে এসেছি। আনবার নিচে FAQ ব্যবহার করেছি। FAQ থেকে বিশেষ কিছু প্রশ্নের সাথে সহজে উত্তর পাবেন। তবে তার সাথেও আমরা ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও প্রতিকার নামক অপশন টি আমাদের নিতিমালার হিসেব করে দিয়েছি। আপনারা যারা আমাদের নিয়মিত পাঠক আছেন, তারা জানেন যে, আমরা আমাদের প্রতিটি পোস্টের এমন একটা অপশনে পুরো পোস্টের সমন্ধে আমাদের একটা মন্তব্য রাখি।
মুলত প্রাথমিক ভাবে বলতে গেলে ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও প্রতিকার বলতে আমাদের সচেতনতার খুবই প্রয়োজন। আপনার আমার ঘরের পাশে, বাসার ছাদে, রাস্তার পাশে সহ বিভিন্ন জায়গাতে কেন ময়লা আবর্জনা থাকবে। আমরা নিজেরাই নিজেদের জন্য ক্লিনার হতে পারি না। আমরাই নির্ধারিত স্থানে ময়লা ফেলতা পারি তো। আমরা পানি জমে পচে যাওয়ার আগেই পরিষ্কার করে দিতে পারি তো।
আমরা মানুষ হিসেবে সবাই ই প্রায় সয়ং সম্পুর্ন। হাত পা এবং বিবেক সব ই ঠিক আছে। একজন পাগল, যার বিবেক নষ্ট, একজন প্রতিবন্ধি যার চলাফেরায় সমস্যা, তারা একটা অপরিষ্কার অবস্থা তৈরি করতে পারে, এবং মেনেও নিতে পারে। তবে আমরা তা কিভাবে মানতে পারি।
আমাদের প্রয়োজন হবে নিজেদের অবস্থানে থেকে সমান নষ্ট হওয়া থেকে সবাইকে সচেতন করা। সবার সাথে আমাকেও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজে লাগানো। নিজেদের এই প্লানেটের জন্য নিজেকে হিরো বানানো।
অতপর যদি ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিষয়ে আরো কথা বলি, তাহলে উপরের কথাগুলোই রিপিট করতে হবে। তার সাথে নতুন হিসেবে বলতে চাই A,B,C তিনটা গ্রুপে ভাগ করা আছে। সেখান থেকে প্রাথমিক অবস্থায় থাকলে সেটা হোম টিটমেন্ট করা যেতে পারে। তবেও ডাক্তারের পরামর্শ এবং চিকিৎসা নিতে হবে। তার সাথে আমাদের বিশেষ ভাবে লক্ষ রাখতে হবে B, C গ্রুপের দিকে। B গ্রুপে পড়ে গেলেই হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। সাথে সাথে স্যালাইন সহ উপযুক্ত চিকিৎসা নিতে হবে।
হাতুড়ে ডাক্তারের উপরে নির্ভরশীলতা ছেড়ে দিন। সর্বপরি শ্রস্টাকে ডাকতে আর তার কাছে অভিযোগ করতে শিখুন। নিজের আর নিজের সমাজের জন্য উপযুক্ত মানুষ হন, যা সবার জন্য ভালো হবে। আর আমাদের সাইটের সাথেই থাকুন।