অঞ্জনি হলো এক ধরনের সংক্রমণ যা চোখের পাতাকে প্রভাবিত করে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় যা স্টাই(Stye) বা হরডিউলাম, তাই চলতি কথায় চোখের অঞ্জনি।এটি চোখের পাতার ভেতরের বা বাইরের পৃষ্ঠতলে হতে পারে। চোখের পাপড়ি যেখান থেকে গজায় , সেই রেখা ঘেঁষে যে লাল লাল ছোট দানা বা পুটলির মতো তৈরি হয় সেটা অঞ্জনি।
চোখে অনেক রকমের গ্রন্থি আছে ।এমনই একটি চোখের পানি তৈরি করে,এর নাম মেবোমিয়ান গ্রন্থি।এই গ্রন্থির মুখ বন্ধ হয়ে গেলে ভেতরে ময়লা জমে সংক্রমণ থেকে অন্জ্ঞনির সৃষ্টি হয়।এটি একটি ছোট ফোঁড়ার মতো হয় এবং লাল হয়ে ফুলে যায় এবং ব্যথার সৃষ্টি করে। অনেক সময় পুঁজ ও হয়ে যায়।এই অবস্থায় চোখের পাতা খুলতে কষ্ট হয়।
ঘন ঘন অঞ্জনি কেন হয়
চোখে ময়লা জমে এবং সংক্রমণ হলেই কেবল অন্জ্ঞনি দেখা দেয়। তাছাড়া চোখ পরিষ্কার না রাখা,ময়লা হাতে বারবার চোখ স্পর্শ করলে এটি হতে পারে।চোখ ও চোখের পাতার উপর মৃতকোষ,ধুলো-ময়লা বা তেল জমে চোখের ছোট ছোট তেল গ্রন্থি গুলোর মুখ বন্ধ করে দেয়।
তখন ভেতরে ব্যাক্টেরিয়ার জন্ম নেওয়ায় অন্জ্ঞনি হয়। তাছাড়া ডায়াবেটিস এবং ইমিউন সিস্টেম দুর্বল থাকলেও এটি হয়। যেহেতু এটি একটি সংক্রমিত সমস্যা , তাই এটি স্পর্শের দ্বারা ছড়ায়, রুমাল বা আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্র ভাগ করে নেওয়ার মাধ্যমেও এটি ছড়াতে পারে।
চোখের অঞ্জনি ঔষধ
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন ঔষধ ব্যবহার না করাই ভালো। তবে অন্জ্ঞনির জন্য সাধারণত ব্যবহৃত হয়:-
১.এন্টিবায়োটিক আই ড্রপ বা মলম:যেমন: মক্সিফ্লক্সাসিন, টোবরামাইসিন।
২.পেইন কিলার বা ব্যথার ওষুধ: প্রয়োজনে আইবোপ্রুফেন।
চোখের অঞ্জনি সারানোর উপায়
উষ্ণ পানির সেঁক: একটি পরিষ্কার কাপড় নিয়ে সেটা দিয়ে গরম পানিতে ডুবিয়ে নিন। তারপর কাপড় থেকে পানি নিংড়ে চোখের উপর ৫-১০ মিনিট রাখুন । এভাবে দিনে তিন থেকে চার বার সেঁক দিন। এটি ফোলা কমায় এবং পুঁজ বের করতে সহায়তা করে।
টি-ব্যাগ ব্যবহার: গরম টি ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। কারণ ,এতে থাকে এন্টি- ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান। ব্যবহৃত চায়ের ব্যাগ হালকা গরম করে চোখের উপর ৫-১০ মিনিট রাখুন।
মধু ব্যবহার: মধুতে প্রাকৃতিক এন্টি-ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান রয়েছে। সামান্য মধু চোখের আশেপাশে লাগাতে পারেন।
হলুদ পানি: হলুদ এন্টিসেপটিক উপাদান রয়েছে। অল্প হলুদ গরম পানিতে মিশিয়ে কটন দিয়ে সেঁক দিতে পারেন।
চোখ পরিষ্কার রাখুন: পরিষ্কার পানি দিয়ে চোখ পরিষ্কার রাখুন। অঞ্জনি হলে কখনো চোখ ঘষবেন না। এর উপর বারবার হাত দেবেন না।
সর্তকতা
- অঞ্জনি ফোটার চেষ্টা করবেন না।
- চোখে হাত দেওয়া বা ঘষা এড়িয়ে চলুন।
- যদি ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে না সারে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
- চোখ লাল হলে বা বেশি ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
আর এই ধরনের স্বাস্থ্য বিষয়ক সকল তথ্য পেতে আমাদের সাইটের নটিফেকেশন চালু করে রাখতে পারেন। সেই সাথে নিচের হোয়াটসঅ্যাপে ও জয়েন করে সকল আপডেট তথ্য পেতে পারেন।
চোখের অঞ্জনি ঔষধ?
চোখের অঞ্জনির জন্য সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিক আই ড্রপ বা অয়েন্টমেন্ট ব্যবহার করা হয়। তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
চোখের অঞ্জনি কতদিন থাকে?
সাধারণত অঞ্জনি ৭-১০ দিনের মধ্যে সেরে যায়। তবে জটিল হলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
চোখের অঞ্জনি সারানোর উপায়?
গরম পানির সেঁক দিন, পরিষ্কার রাখুন, এবং প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করুন।
চোখের অঞ্জনি কি ছোঁয়াচে?
চোখের অঞ্জনি সাধারণত ছোঁয়াচে নয়, তবে সংক্রমিত জায়গা স্পর্শ করলে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
চোখে অঞ্জনি হলে করণীয়?
অঞ্জনি হলে চোখে গরম পানির সেঁক দিন, পরিষ্কার রাখুন, এবং চোখ ঘষা এড়িয়ে চলুন।
ঘন ঘন অঞ্জনি কেন হয়?
ঘন ঘন অঞ্জনি হলে এটি চোখের পাতা বা ত্বকের তেলগ্রন্থি ব্লক হওয়ার ফল হতে পারে। ডায়াবেটিস বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলেও এটি হতে পারে।