শীত একটি সুন্দর ঋতু। এই সময়টায় বাতাসে শুষ্ক ভাব বেড়ে যায়। এই শুষ্ক বাতাস ত্বকের আদ্রর্তা কেড়ে নেয় ,ত্বককে করে রুক্ষ ও শুষ্ক।এই শুষ্ক ত্বক ফেটে গিয়ে চুলকানির সমস্যা দেখা দেয়। শীতকালীন চুলকানি, যাকে ডাক্তারি ভাষায় জেরোটিক একজিমা বলা হয়।
এটি একটি ত্বকের অবস্থা যা শুষ্ক ,চুলকানি ত্বক দ্বারা চিহ্নিত করা হয় যা সাধারণত শীতকালে বিভিন্ন অস্বস্তিকর উপসর্গের দিকে পরিচালিত করে।এলার্জির কারণে ও চুলকানি হতে পারে।চুলকানি ত্বক বা প্রুরিটাস,একটি সাধারন ও হতাশাজনক অবস্থা যা বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষকে প্রভাবিত করে।
ত্বক সম্পর্কিত সমস্যা যা চুলকানির কারণ হতে পারে তার মধ্যে রয়েছে একজিমা (ডার্মাটাইটিস),সোরিয়াসিস এবং স্ক্যাবিস। পরজীবী, পোড়া দাগ, পোকামাকড়ের কামড় এবং আমবাতগুলিও ত্বকের জ্বালাপোড়া চুলকানিতে অবদান রাখে।
চুলকানির উপসর্গ: চুলকানি বিভিন্ন উপায়ে প্রকাশ পেতে পারে হালকা জালা থেকে তীব্র অস্বস্তি পর্যন্ত। চুলকানির লক্ষণগুলো হলো:
১. স্ফীত বা লালচে ত্বক,
২. স্ক্রাচ চিহ্ন,
৩. বাম্প,দাগ বা ফুসকা,
৪. শুকনো ফাটল যুক্ত ত্বক।
শীতকালে চুলকানির কারণ:
১. বাতাস আর্দ্রতার অভাব: শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকে যা ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা নষ্ট করে দেয়। আর্দ্রতার অভাব শীতে চুলকানির বিকাশের একটি প্রধান কারণ।
২. ঠান্ডা পানি ব্যবহার: শীতকালে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করলে ত্বকের আর্দ্রতা কমে যেতে পারে।
৩. শুষ্ক ত্বক:শীতকালে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার ফলে ত্বক ফেটে গিয়ে চুলকানি হতে পারে।
৪. অতিরিক্ত গরম পানির ব্যবহার: শীতকালে গরম পানি ব্যবহারের কারণে ত্বকের প্রাকৃতিক তেলগুলো চলে যায়, যা ত্বক রুক্ষ ও শুষ্ক করে দেয়।
৫. কঠোর সাবান ও ডিটারজেন্ট: অনেক সাবান ,শ্যাম্পু ও ডিটারজেন্টে কঠোর রাসায়নিক, থাকে যা ত্বকের আর্দ্রতা ছিনিয়ে নেই।
চুলকানি থেকে মুক্তির উপায়:
১.নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা: শীতকালে ত্বক আর্দ্র রাখতে ঘন ঘন ময়েশ্চারাইজার লাগানো উচিত, বিশেষ করে গোসলের পরে। যেমনঃ সিড়ামাইডস,হায়ারোলুনিক এসিড ও গ্লিসারিন জাতীয় ময়েশ্চারাইজার।
২. গোসলের অভ্যাস পরিবর্তন: অতিরিক্ত গরম পানির পরিবর্তে কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করা।
৩. আর্দ্র পরিবেশ বজায় রাখা: ঘরের মধ্যে আদ্রতা বজায় রাখতে হিউমিডি ফায়ার ব্যবহার করা যেতে পারে। অভ্যন্তরীণ আর্দ্রতার মাত্রা ৩০% থেকে ৫০% এর মধ্যে রাখতে হবে লক্ষ্য রাখবেন।
৪. প্রচুর পানি পান করুন: ত্বকের ভেতর থেকে হাইড্রোজেন বজায় রাখতে প্রচুর পানি পান করুন।
৫.লীপবাম ও হ্যান্ড ক্রিম ব্যবহার করুন: ঠোঁট ও হাত শীতকালে বেশি শুষ্ক হয়, তাই এগুলার যত্নে আলাদা ক্রীম ব্যবহার করা ভালো।
৬.উপযুক্ত পোশাক নির্বাচন: নরম সুতি কাপড় নির্বাচন করুন । সরাসরি উল এবং সিনথেটিক ফাইবারযুক্ত কাপড় এড়িয়ে চলুন, কারণ এগুলো চুলকানিকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
৭. স্ক্র্যাচিং এড়িয়ে চলুন: স্ক্র্যাচিং এড়াতে নখ ছোট রাখুন এবং ঘুমের সময় সুতির গ্লাভস পরার কথা বিবেচনা করুন।
৮. ভারসাম্যপূর্ণ ডায়েট অনুসরণ করুন: স্বাস্থ্যকে সমর্থন করতে ওমেগা-3 ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবার এবং বেশি করে সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল খেতে হবে।
৯.ওটমিল বাথ: ওটমিল গুড়ো করে পানিতে মিশিয়ে গোসল করলে ত্বকের ক্ষতি প্রশমিত হয়।
১০. ডার্মাটোলজিস্ট এর পরামর্শ নেওয়া: অতিরিক্ত চুলকানি হলে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়
•হাইড্রোকোর্টিসন ক্রিম হালকা থেকে মাঝারি চুলকানি কমাতে ব্যবহার করা যায়।
•অ্যান্টিহিস্টামিন, স্টেরয়েডের মত মৌখিক ওষুধ চুলকানি কমাতে সহায়তা করে।
•অ্যান্টি ইচিং লোশন কেমন ক্যালামাইন লোশন, যা দ্রুত চুলকানি কমায়।
•আকোপাংচার বা হালকা থেরাপির মত বিকল্প থেরাপি ক্রমাগত চুলকানি পরিচালনার বিকল্প।
সাধারণত শুষ্ক আবহাওয়া এবং ত্বকের শুষ্কতার কারণে শীতকালে চুলকানির সমস্যা সৃষ্টি হয়।সমস্যা যদি গুরুতর হয় এবং ঘরোয়া পদ্ধতি ও সাধারণ ঔষধ কাজ না করে অতি দ্রুত ডার্মাটোলজিস্ট এর পরামর্শ নিতে হবে।
চুলকানির ঔষধের নাম স্কয়ার
চুলকানির ভালো করার অনেক অনেক কোম্পানির ওষুধ রয়েছে। অনেক ওষুধের মধ্যে আমাদের অনেকের কাছেই স্কয়ার কোম্পানির ওষুধ বেশি জনপ্রিয়। তাই আমি বিশেষ ভাবে আপনাদের সাথে স্কয়ার কোম্পানির ওষুধ শেয়ার করবো।
লরিক্স লোশন এবং লরিক্স ক্রিম। এই ওষুধটাই সবচেয়ে বেশি কাজ করে। আর এটি ব্যবহারের কিছু নিয়ম নীতি রয়েছে। আপনি সে নিয়মগুলো দেখে আসতে পারেন।