অলিভ অয়েল কে বাংলায় জলপাইয়ের তেল ও বলা হয়। অলিভ অয়েল হলো জলপাই ফল থেকে প্রাপ্ত একটি প্রাকৃতিক তেল যা স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং পুষ্টিগুনে ভরপুর। চুল ও ত্বকের যত্নে অলিভ অয়েলের জুড়ি মেলা ভার। এটি একটি উদ্ভিজ্জ তেল। জলপাই গাছের বৈজ্ঞানিক নাম ওলেয়া ইউরোপিয়া। জলপাই গাছের ফলের রস থেকে এই তেল তৈরি করা হয়।
এটি প্রাচীন কাল থেকেই রান্না ,ত্বকের যত্ন এবং স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর গুণ আমাদের অনেক সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করে। এটি অনেক বরকতময় তেল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, জলপাই তেল খেতে এবং শরীরে মালিশ করতে বলেছেন। লেবানন, সিরিয়া, তুরস্কের সামুদ্রিক অঞ্চল এবং ইরানে এই তেল বেশি পাওয়া যায়।
অলিভ অয়েল তেল ব্যবহারের নিয়ম
অলিভ অয়েল বিভিন্ন কাজে ব্যবহার যোগ্য। এটি বিভিন্ন কাজে বেশ জনপ্রিয়তার সাথে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তার মধ্যে অন্যতম কিছু হলো।
- রান্নাবান্না ও খাওয়ার কাজে ব্যবহার করা হয় অলিভ অয়েল
- চুলে ব্যবহারের জন্য বেশ জনপ্রিয় অলিভ অয়েল
চুলে অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম
চুলে অলিভ অয়েল ব্যবহারের ফলে চুল হয় মশৃন এবং খুশকি মুক্ত শক্ত। তার সাথে অলিভ অয়েল বা জলপাইয়ের তেল ব্যবহারে চুল ঘন এবং কালো করে তোলে।
অলিভ অয়েল ব্যবহারের জন্য বিশেষ কোন নিয়ম নেই। সাধারন তেলের মতোই পরিমাণ মতো হাতে ঢেলে সেটি সাভাবিক ভাবে চুলে ভালো করে মালিশ করতে হবে।
মালিশের পরে ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারেন। তবে তেল সামান্য গরম করে নিলে আরো ভালো ফলাফল পাওয়া যেতে পারে।
৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা পার হওয়ার পরে সেম্পু দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিতে পারেন। এর পরে সেখানে সম্ভব হলে কন্ডিশোনাল ব্যবহার করতে পারেন।
শরীরে অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম
চুলে অলিভ অয়েল ব্যবহারের সাথে সাথে এই অলিভ অয়েস শরীরেও ব্যবহার করার বিষয়ে বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম মাধ্যম হলো।
গোসলের বা হাত পা ধোয়ার পরে অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। এটি ত্বকের শুষ্কতা দূর করে এবং ত্বকের সতেজতা বজায় রাখে।
বাচ্চাদের অলিভ অয়েল তেল ব্যবহারের নিয়ম
বাচ্চাদের অলিভ অয়েলের ব্যবহার খুবই জনপ্রিয়তা রয়েছে। বাচ্চাদের মশৃন ত্বকে এটি দারুন কাজ করে। তাই বাচ্চাদের জন্য এটি ব্যবহার করতে পারেন।
অল্প পরিমাণে তেল নিয়ে হাতে নিয়ে বাচ্চাদের গোসলের পরে শরীরে লাগিয়ে দিবে। তাহলেই যথেষ্ট হবে। কিন্তু বাচ্চাদের ক্ষেত্রে অল্প পরিমাণে দেওয়া উচিৎ। আর বেশি পরিমাণে দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
অলিভ অয়েল তেলের উপকারিতা কি
অলিভ অয়েল না জলপাই তেলের ব্যবহারের বিশেষ অনেক উপকারিতা রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম কিছু উপকারিতা নিচে দেওয়া হলো।
১.উচ্চ রক্তচাপ কমায়: জলপাই তেলের সাহায্যে আপনি উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। কারণ, খাবারে অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে আমাদের শরীরের রক্ত সঞ্চালন ভালোভাবে হয়।
২.হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক: এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল হৃদরোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে । কারণ এতে মোনো-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট বা ভালো চর্বি থাকে।
৩.ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: রান্নায় সঠিক মাত্রায় নিয়মিত অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে অতিরিক্ত চর্বি গ্রহণ করে এবং হজমে সহায়ক। যা সহজে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
৪.চুলের যত্নে: ফ্যাটি এসিড এবং অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ অলিভ অয়েলে ভিটামিন-ই রয়েছে। এই সব উপাদান গুলি চুলে পুষ্টি যোগায়, খুশকি দূর করে, চুলের গোড়া মজবুত করে চুল পড়া কমায় এবং চুলের আগা ভেঙ্গে যাওয়ার মত সমস্যা দূর করে।
৫.ত্বকের যত্নে কার্যকর: অলিভ অয়েলকে ত্বকের আর্দ্রতার জন্য একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার হিসেবে গণ্য করা হয়। ফ্যাটি এসিডের সাথে ভিটামিন এ এবং ই এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ অলিভ অয়েল ত্বকের দাগ, কুচকানো লাইন কমিয়ে দেয় এবং বার্ধক্য রোধে সহায়তা করে।
৬.ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে: অলিভ অয়েলে থাকা ফাইট্রোনিউট্রিয়েন্ট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে ফ্রি রেডিকেলের ক্ষতি রোধ করে, যা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
৭. কোলেস্টেরল কমায়: এই তেল ব্যবহার করলে আপনার শরীরের কম ঘনত্ব লিপোপ্রোটিন বা খারাপ কোলেস্টেরল কমে যাবে এবং ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়তে সাহায্য করবে। তারপরে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকবে।
৮. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: অলিভ অয়েল রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা প্রচার করে।
৯. মস্তিষ্কের জন্য: প্রতিদিন অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে জ্ঞানীয় ঝুঁকি কমে যায়। এটি বিষন্নতা দূর করতে সাহায্য করে।
অলিভ অয়েল অপকারিতা
১. ওকে ব্ল্যাকহ্যাডসের সমস্যা তৈরি করে।।
২. অনেকের অলিভ অয়েল ব্যবহারে এলার্জি সমস্যা হতে পারে।
৩. ফ্যাটযুক্ত অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে হজমে সমস্যা হতে পারে।
৪. অলিভ অয়েলকে অন্য কোন তেলের সাথে ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বকে জ্বালা, দাগ ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।
অলিভ অয়েল তেলের দাম কত
বিভিন্ন কোম্পানিতে বিভিন্ন ধরনের প্যাক তৈরি করে থাকে অলিভ অয়েলের। সেক্ষেত্রে আমরা অলিভ অয়েলের বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন প্যাক সমন্ধে তালিকা দিচ্ছি। আর এর অরজিনাল প্যাক পেতে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে জয়েন করে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
ব্র্যান্ড | পরিমাণ | দাম |
---|---|---|
লা অলিভা অলিভ অয়েল | ১০০ মিলি | ২০০ |
অর্কাইড অলিভ অয়েল | ২৫০ মিলি | ২৬০ |
জয়তুন এক্সট্রা ভার্জিন | ১০০ মিলি | ২২৫ |
এক্সট্রা ভার্জিন (তুরস্ক) | ৩ লিটার | ২,৯৫০ |
এটি বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তন হতে পারে। এবং আমরা চেষ্টা করবো সেটি সাথে সাথে আপডেট করে দেওয়ার জন্য। আর এই ধরনের সকল আপডেট পেতে আমাদের হোয়াটঅ্যাপে ফলো করে রাখতে পারেন। আর নটিফেকেশন চালু করে রাখলে আমাদের লেখা সকল পোস্ট সবার আগে পেয়ে যাবেন।