ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম। আর আল্লাহর বিধী বিধান রয়েছে, যা আমাদের পালন করা অত্যান্ত গুরুত্বপুর্ন। সেই সাথে মৃত্যুর পরে ভালো ফলাফল পেতে আমাদের প্রতিদিনের কিছু আমল করা উচিৎ। আর অই আমল আমাদের প্রিয় রাসুল স. এর দেওয়া একটা রোডম্যাপ দেওয়া আছে।
আজ আমরা প্রতিদিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পরে করার জন্য আল্লাহর নবী স. এর দেওয়া আমলের রোডম্যাপ অনুযায়ী আপনাদের জানিয়ে দিব।
এখানে দেওয়া সকল রোডম্যাপ আমাদের আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম মাধ্যম। কারন এই আমলগুলো আল্লাহর প্রিয় বান্দাগুলো, যারা আল্লাহ রাসুল স. এর প্রিয় সাহাবা ছিল।
ফরজ নামাজের পর নবীজির আমল
প্রতিদিন পাঁচ বারের ফরজ নামাজের পরে যে সকল আমল আমাদের করা উচিৎ, সেগুলো একটা তালিকা নিচে দেওয়া হলোঃ
তাসবিহ ও তাহমিদ (সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার)
এখানে দেওয়া আমলগুলো প্রতি ফরজ নামাজের পরেই করতে হবে। তাই আগে আপনারা প্রতিদিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পরে এই আমলগুলোর পালন শুরু করবেন। তার পরে কয়েক দিনের মধ্যে এই আমলে অব্ভস্ত হলে নিচের আমলের দিকে আগাবেন।
প্রতি ফরজ নামাজের পরে ধারাবাহিক ভাবে আমলগুলো করবেন। প্রথম ধাপে থাকবেঃ
- ৩ বার – ইস্তেগফার – (আস্তাগফিরুল্লাহ)
- ১১ বার – সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (স.)
- ১ বার – সূরা ফাতিহা
- ১ বার – আয়াতুল কুরসি
তার পরের ধাপে করনীয় কিছু আমল।
- ৩৩ বার – সুবহানাল্লাহ (মহান আল্লাহ পবিত্র)
- ৩৩ বার – আলহামদুলিল্লাহ (সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য)
- ৩৪ বার – আল্লাহু আকবার (আল্লাহ মহান)
সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস
ফরজ নামাজের পর সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস একবার করে পাঠ করা সুন্নত।ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর এগুলো তিনবার করে পড়া সুন্নত। (আবু দাউদ, তিরমিজি) তার সাথে উপরের সকল আমল করার পরে নিচের আমল করবেন।
“اللهم أنت السلام ومنك السلام” দোয়া পাঠ
নামাজের শেষে সালাম ফেরানোর পর নবীজী বলতেন:
اللّٰهُمَّ أَنْتَ السَّلَامُ وَمِنْكَ السَّلَامُ، تَبَارَكْتَ يَا ذَا الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ
উচ্চারণ: “আল্লাহুম্মা আনতাস সালামু ওয়া মিনকাস সালাম, তাবারাকতা ইয়া জাল-জালালি ওয়াল-ইকরাম”
অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি শান্তি, তোমার থেকেই শান্তি। তুমি বরকতময়, হে মহামর্যাদাবান ও মহাপ্রতিপালক।
দোয়া বা প্রাথনা করা
ফরজ নামাজের পর দোয়া করার সুন্নত রয়েছে। এই সময় দোয়া কবুল হওয়ার একটি বিশেষ সময়।আল্লাহর কাছে নিজের প্রয়োজনীয় বিষয়, পারিবারিক সুখ-শান্তি ও আখিরাতের জন্য দোয়া করা উচিত। দুনিয়া ও আখিরাতের সকল চাওয়া প্রতি ফরজ নামাজের পরে আল্লাহর কাছে চেয়ে নেওয়া উচিৎ।
হাদিস কুরআনের তথ্য অনুযায়ী যানা যায়, ফরজ নামাজের পরে আল্লাহ খুব তারাতারি দুয়া কবুল করেন। আর নামাজের জায়গায় বসে দুয়া করলে সেটি আল্লাহর কাছে সহজে পৌছায়। আর নামজ ও অন্যান্য আমালের সাথে এখানে বেশি প্রাধন্য পায়। আর নামাজের পরে দুয়া করা সহজ হয়। কারন তখন আল্লাহ মুখী মন হয়।
মসজিদে কিছুক্ষণ বসে থাকা
ফরজ নামাজের পর কিছুক্ষণ মসজিদে বসে থাকা, জিকির ও তাসবিহ পাঠ করা উত্তম আমল।বিশেষ করে ফজর নামাজের পর সূর্য ওঠা পর্যন্ত মসজিদে বসে জিকির ও ইবাদত করা নবীজির সুন্নত ছিল।
তবে দুনিয়াবী রিজিকের জন্য অত্যান্ত প্রয়োজনীয় অবস্থা থাকে, তাহলে সেই রিজিকের জন্য দুনিয়ায় বিস্তার করা।
জুমার নামাজের পরের আমল কি কি
প্রতিদিনের সাধারন ৫ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পরের আমলগুলোই পালন করা উচিৎ। তবে অনেক সময়ে জিলেপি বা অন্যান্য কাজের বা দোয়ার জন্য প্রতি ৫ ওয়াক্ত নামাজের পরের আমল ছুটে যায়। তাই এই ধরনের বোকাামি থেকে দুরে থাকা উচিৎ।
সেই সাথে বিশেষ আমল করা যায়। সাধারনত জুমার নামাজের পরে ৮০ বার একটি দুরুদ পড়ার আমল আছে। আর সেই আমল সমন্ধে আমাদের আগের ও একটা পোস্ট আছে, সেখানে গিয়ে সকল বিস্তারিত জানতে পারেন।
আল্লাহুম্মা সাল্লি ওয়া সাল্লিম আলা নাবিয়্যিনা মুহাম্মাদ
তার সাথে বৃহপ্রতিবার দিন শেষে সন্ধার পর থেকে শুক্রবার পর্যন্ত সূরা কাহাফের বিশেষ আমল রয়েছে। সেটিও করতে পারেন। এই সময়ের মধ্যে যে কোন সময় ১ বার সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করতে হয়।
জুমার দিনের বিশেষ আমল সমন্ধে আমরা ভিন্ন পোস্টে সকল তথ্য শেয়ার করে দিব।
বিশেষ উপদেশ
কম আমল করেলও সেটি যদি প্রতিদিন পালন করা যায়, তাহলে সেই অল্প আমাল ই আল্লাহর নিকটে অনেক প্রিয় হয়। কিন্তু যদি একদিন বেশি করে আমল করা হয়, আর সেটি প্রতিদিন না করা হয়, তাহলে সেটি আল্লাহ তালার কাছে প্রতিদিনের আমলের তুলনায় কম প্রিয়।