ড্রাগন ফল (Dragon Fruit) সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর হলেও কিছু মানুষের জন্য এটি ক্ষতিকর হতে পারে। অনেকেই এই ফলকে সুপারফুড মনে করেন, তবে অতিরিক্ত বা অনিয়ন্ত্রিতভাবে গ্রহণ করলে এটি স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। আসুন জেনে নেওয়া যাক ড্রাগন ফলের কিছু সম্ভাব্য ক্ষতিকর দিক।
আপনারা জানেন যে বাংলা ভোরের নিয়মিত পোস্টে আমরা স্বাস্থ বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করে থাকি। যেহেতু ড্রাগন ফল খেলে বিশেষ কিছু সমস্যা দেখা যেতে পারে তাই, আপনাদের প্রিয় বাংলা ভোরে আমরা বিষয়টা তুলে ধরেছি।
অ্যালার্জির ঝুঁকি
অনেকের শরীরে ড্রাগন ফল খাওয়ার পর অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে যে সকল অ্যালার্জির কারন লক্ষ্য করা যেতে পারে সেগুলো হলেঃ
- ত্বকে চুলকানি
- ঠোঁট, জিহ্বা বা মুখ ফুলে যাওয়া
- শ্বাসকষ্ট বা গলার সমস্যা
- বমি বমি ভাব
যদি আপনি নতুন করে ড্রাগন ফল খেতে শুরু করেন, তবে প্রথমবার অল্প পরিমাণে খাওয়া ভালো, যাতে অ্যালার্জি হলে সহজেই শনাক্ত করা যায়।
রক্তে শর্করার মাত্রা
ড্রাগন ফলের প্রাকৃতিক চিনি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রাকে প্রভাবিত করতে পারে। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভালো হতে পারে, তবে অতিরিক্ত গ্রহণ করলে রক্তে শর্করার মাত্রা অনেক কমে যেতে পারে, যা হাইপোগ্লাইসেমিয়ার কারণ হতে পারে। তাই যেহেতু একজন মানুষ সুস্থ থাকতে হলে তার রক্তের সর্করা যথেষ্ট থাকা প্রয়োজন তাই বিষয়টি লক্ষ্য রেখে ড্রাগন ফল খাওয়া আবশ্যক।
বদহজম সমস্যা
ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা স্বাভাবিক হজমের জন্য ভালো। তবে বেশি পরিমাণে খেলে এটি বদ হজম বা হজমের বেশি চাহিদার জন্য বিশেষ কিছু পেটের রোগ দেখা যেতে পারে। এবং পেটে এসিডিটি দেখা যেতে পারে। বিশেষ করে হজম জনিত কিছু বিশেষ রোগ দেখা যেতে পারে যেমনঃ
- ডায়রিয়া
- পেট ফাঁপা
- গ্যাসের সমস্যা
রক্তচাপ
মানুষের দেহের সুস্থতার জন্য রক্তচাপ একটি বিশেষ ভুমিকায় রয়েছে। রক্তচাপের কমতি বা অতিরিক্ত রক্তচাপের ফলে বিশেষ বিশেষ কিছু সমস্যা দেখা যেতে পারে। একই সাথে সম্পুর্ন সুস্থ থাকার জন্য রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন রাখা অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ন।
ড্রাগন ফল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে। তবে যারা নিয়মিত রক্তচাপের ওষুধ গ্রহণ করেন, তাদের জন্য এটি বিপজ্জনক হতে পারে। কারণ এটি রক্তচাপ অত্যধিক কমিয়ে দিতে পারে, যা মাথা ঘোরা, দুর্বলতা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
কিডনির জন্য ঝুঁকি
ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে অক্সালেট থাকে, যা অতিরিক্ত গ্রহণ করলে কিডনিতে পাথর তৈরির সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে পারে। বিশেষ করে, যারা কিডনির সমস্যায় ভুগছেন, তাদের এই ফল নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
ওজন বৃদ্ধি
ড্রাগন ফলকে স্বাস্থ্যকর মনে করা হলেও, এতে প্রাকৃতিক চিনি বিদ্যমান। অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া হলে এটি ক্যালোরি বৃদ্ধি করতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
ওষুধের সাথে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি
বিশেষ কিছু ওষুধ চলাকালিন সময়ে এটি খাওয়ার জন্য সতর্কতা থাকতে পারে। কারন এই বিশেষ ফলে নানান ধরনের পুষ্টি উপাদান প্রয়োজনের থেকেও বেশি রয়েছে। সেই সাথে কিছু কিছু ওষুধের কার্য ক্ষমতা কমিয়ে বা বাড়িয়ে এটি ক্ষতিকর অবস্থা তৈরি করতে পারে। তাই অবশ্যই এই বিষয়ে লক্ষ্য রাখা খুবই জরুরি।
উপসংহার
যদিও ড্রাগন ফল পুষ্টিগুণে ভরপুর, তবে এটি সবার জন্য উপযুক্ত নয়। অতিরিক্ত বা অনিয়ন্ত্রিতভাবে খেলে এটি কিছু স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। তাই এই ফল খাওয়ার আগে নিজের শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করাই ভালো।
ড্রাগন ফল যেহেতু সকল মানুষ এখনো হয়তো ক্ষেতে পারেনি। তাই আপনি আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে যেতে পারেন। এবং আমাদের সকল আপডেট পেতে হোয়াটসঅ্যাপে ফলো করতে পারেন একই সাথে আমাদের নটিফেকেশন চালু করে রাখতে পারেন।