পাথরকুচি পাতার উপকারী ও ক্ষতিকর দিক সমন্ধে জানতে পারবেন বাংলা ভোর অনলাইন পত্রিকা থেকে। আপনারা হয়তো সবাই জানেন যে প্রকৃতি থেকেই সকল ওষুধ তৈরি। তবে তার জন্য বিশেষ প্রকৃয়া রয়েছে। সাপের বিষ যদিও বিভিন্ন সময়ে ওষুধ তৈরির কাজে লাগে, তবে সঠিক প্রকৃয়া অবলম্বন না করলে সেটি অত্যান্ত ভয়াবাহ রূপ ধারন করবে, এটাই বাস্তব।
পাথরকুচি পাতা
পাথরকুচি পাতা: প্রাচীন কাল থেকে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় বিভিন্ন ধরনের ঔষধি গাছ ব্যবহৃত হয়ে আসছে । তার মধ্যে পাথরকুচি পাতা একটি অন্যতম ঔষধি গুণসম্পন্ন গাছ।এটি একটি বীরুৎ জাত উদ্ভিদ।এর বৈজ্ঞানিক নাম Kalanchoe pinnatum।
পাথরকুচি পাতার ইংরেজি নাম হলো: American life plant।পাথরকুচি গাছ সাধারণত দেড় থেকে দুই ফুট লম্বা হয়।এর পাতা মাংসল ও মসৃণ হয়,যা দেখতে অনেকটা ডিমের মতো। পাথরকুচি পাতার চারপাশে ছোট ছোট গোল খাঁজ থাকে।
গাছের বয়স হলে এই খাঁজগুলো থেকে চারা গজায়। তাছাড়া পাতা মাটিতে ফেলে রাখলেই নতুন চারা জন্মায়। পাথরকুচি বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে অতুলনীয়।
চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে,”পাথরকুচি পাতা কিডনি রোগসহ বিভিন্ন রোগের উপকার আসে “।
পাথরকুচি পাতার উপকারিতা:
১.কিডনি ও পিত্তথলির পাথর অপসারণ:এই পাতা কিডনি ও পিত্তথলির পাথর অপসারণে সহায়তা করে। নিয়মিত এই পাতার রস খেলে পাথর ছোট হয়ে বের হয়ে যায়।
২.বাতের ব্যাথা উপশমে: গাঁটের ব্যথা ও বাতের সমস্যার উপশম করতে পাথরকুচি পাতার রস অনেক উপকারী।
৩. পোকার কামর ও ক্ষত নিরাময়ে: ক্ষতস্থান ও পোকা আক্রান্ত স্থানে এই পাতার রস লাগালে ক্ষতস্থান দ্রুত সেরে যায়।
৪. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে: পাথরকুচি পাতা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং মূত্রথলির সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।
৫. শিশুর পেট ব্যথায়: শিশুর পেট ব্যথা হলে, ৩০ থেকে ৬০ ফোঁটা পাথরকুচি পাতার রস মালিশ করলে ব্যথা কমে যায়।
৬. ত্বকের যত্নে: ত্বকের যত্নে পাথরকুচি পাতা অনেক উপকারী। প্রচুর পরিমাণে পানি থাকায় এই পাতাতে ত্বকের জ্বালাপোড়া কমানোর ক্ষমতা থাকে।
৭. অম্বল ও পেটের সমস্যা কমাতে: পাথরকুচি পাতা গ্যাস্ট্রিক, অম্বল দূর করতে কার্যকরী। একটু চিনির সাথে এক বা দুই চামচ কুচি পাতার রস পানির সাথে মিশিয়ে খেলে পাওয়া যায়।
৮. জন্ডিস নিরাময়ে: লিভারের যেকোন সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে তাজা পাথরকুচি পাতা অনেক উপকারী।
৯.পাইলস নিরাময়ে: গোলমরিচ ,পাথরকুচি পাতার রসের সাথে মিশিয়ে খেলে অর্শ – পাইলস থেকে মুক্তি মেলে।
পাথরকুচি পাতার ক্ষতিকর দিক:
১.অতিরিক্ত পাথরকুচি পাতা খেলে এলার্জির পরিমাণ বেড়ে যায়। পরিমিত পরিমানে খাওয়া উচিত।
২. পাথরকুচি পাতা অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে খাবারের প্রতি অনীহা সৃষ্টি হয়।
৩.গর্ভবতী নারীদের জন্য পাথরকুচি পাতা ক্ষতিকর হতে পারে।
৪. অতিরিক্ত সেবন করলে পাকস্থলীতে নানাবিধ সমস্যা দেখা দিবে।
৫.প্রয়োজনের চেয়ে রস বেশি খেলে ডায়রিয়া হতে পারে।
৬. পরিমাণের রস খেলে ডায়রিয়া হতে পারে।
পরিশেষ: ঔষধি গাছ হিসেবে পাথরকুচি পাতার ভূমিকা অপরিসীম। সঠিকভাবে ব্যবহারে এটি কার্যকরী ভূমিকা রাখে। পাথরকুচি পাতা সকালে খালি পেটে খাওয়া উত্তম। অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না।
খালি পেটে পাথরকুচি পাতা খেলে কি হয়
খালি পেটে পাথরকুচি পাতা খেলে লিভারের জন্য বিশেষ উপকার পাওয়া যায়। তার সাথে বদ হজম, গ্যাসটিক সহ ইত্যাদি রোগ থেকে নিরাময় পাওয়া যায়। তবে অতিরিক্ত পরিমানে পাথরকুচি পাতা খেলে এর কিছু ক্ষতিকর প্রভাব ও দেখা যেতে পারে।
পাথরকুচি পাতা খাওয়ার নিয়ম
যে কোন সময় খেতে পারেন, পাথরকুচি পাতা। তবে এটি সকালে খালি পেটে খেলে বিশেষ কিছু উপকার পাওয়া যায়। সামান্য কষ্টে হওয়ায় এটা খাওয়ার সময় লবন নিতে পারেন। এটি চিবিয়ে খেয়ে থাকে, তবে বিশেষ কারনে এটি জুস করেও খাওয়া হয়।