চিরতা একটি বিশেষ ধরনের তৃণ। এই তৃণটি শুকিয়ে তা গুড়ো করে পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়ার মাধ্যমে রয়েছে বেশ কিছু উপকারিতা। এই সকল উপকারিতা সমন্ধে জানতে পারেন। একই সাথে আরো জানতে পারবেন চিরতা খাওয়ার বিশেষ কি কি সতর্কতা থাকে বা বিশেষ কি কি ধরনের ক্ষতি হতে পারে।
চিরতার উপকারিতা
চিরতা খাওয়ার মাধ্যমে বেশ কিছু উপকারিতা পাওয়া যায়। বিশেষ করে কিছু কিছু রোগ ও কিছু কিছু জীবানু দেহের ভেতর থেকে ধংশ করে দিতে পারে।
যে সকল রোগ বা জীবানু চিরতা খাওয়ার মাধ্য়মে দেহের ভেতর থেকে দূর হয়, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম রয়েছেঃ
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
- লিভারের সুরক্ষা
- হজম শক্তি বৃদ্ধি
- জ্বর কমাতে কার্যকর
- রক্ত পরিশোধন
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
- চুল পড়া কমায়
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়
এর সাথে আরো বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা লক্ষ্য করা যায়। তার সাথে আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে ক্ষতিকর প্রভাব ও ফেলতে পারে।
চিরতা খাওয়ার অপকারিতা
চিরতা খাওয়ার যে সকল প্রকারের অপকারিতা থাকতে পারে, সেগুলো সমন্ধে জেনে নেওয়াটা খুব জরুরি। কারন এই সকল ক্ষতিকর প্রভাবটি দেখা গেলে চিরতা খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিৎ হবে।
যারা চিরতা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে পারেন, তাদের জন্য যে সকল বিষয়গুলো লক্ষ্যনীয় তার তালিকা হলোঃ
- চিরতা খুবই তিক্ত স্বাদযুক্ত
- স্বাভাবিকের চেয়ে কম রক্তচাপের সমস্যা
- গ্যাসের সমস্যা
- ডায়রিয়া
- পেটে ব্যথা
- শর্করার মাত্রা কম থাকলে
- ডায়াবেটিস রোগীর নিয়ন্ত্রন মেনে শেবন
- চিরতা খাওয়ার পর অ্যালার্জি
- গর্ভবতী মহিলাদের জন্য চিরতা সুরক্ষিত নয়
- শিশুদের জন্য চিরতা এড়িয়ে চলাই ভালো
- ডায়াবেটিস, রক্তচাপ বা হৃদরোগসহ কিছু কিছু ওষুধের কার্যক্ষমতা কমাতে পারে
চিরতা খাওয়ার যে সকল অপকারিতা থাকতে পারে। তার মধ্যে অন্যতম কিছু তালিকায় রাখা হলোঃ
- অনেকের ক্ষেত্রে বমি বমিভাব
- অরুচি বা ক্ষুধামন্দা সৃষ্টি করতে পারে
- চিরতা রক্তচাপ কমায়
- স্বাভাবিকের চেয়ে কম রক্তচাপে এটি বিপজ্জনক
- অতিরিক্ত পরিমাণে চিরতা খাওয়ার ফলে পেটে ব্যথা
- ডায়রিয়া বা গ্যাসের সমস্যা হতে পারে
- চিরতা রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়
- অ্যালার্জি, চুলকানি বা ত্বকের সমস্যা হতে পারে
- জরায়ু সংকোচনের ঝুঁকি বাড়াতে পারে
- কিছু ওষুধের কার্যকারিতায় লোপ পোতে পারে
চিরতা কি কিডনির ক্ষতি করে
যদি চিরতা সঠিক মাত্রায় খাওয়া হয়, তাহলে চিরতা খাওয়ার কারনে কিডনির কোন ক্ষতি করে না। তবে অনেক স্থানে প্রচলিত রয়েছে যে, চিরতা কিডনির ক্ষতি করতে পারে। তবে এটি আসলে ক্ষতি করে না।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে চিরতা ডিটক্সিফায়ার হিসেবে কাজ করতে পারে, তাই এটি কিডনি ও লিভারের জন্য উপকারি। কিডনি ও লিভারের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।
চিরতা খাওয়ার নিয়ম
চিরতা পানির সাথে মিশিয়ে খেতে হয়। তবে সাধারনত দুই ধরনের চিরতা আমাদের সামনে পাওয়া যেতে পারে। তার মধ্যে রয়েছে ১. গুড়ো চিরতা ২. শুকনো চিরতা
তবে যদি চিরতার চাষ করে থাকেন। বা চিরতা গাছ পেয়ে থাকেন, তাহলে সেটি কাঁচা পাতাও গড়ম পানিতে দিয়ে বা চায়ের সাথে খেতে পারেন। তবে লম্বা সময়ের জন্য বা ভালো ফলাফল পেতে শুকিয়ে খাওয়া ই ভালো।
খাওয়ার জন্য রাতের বেলা ভিঁজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খেতে পারেন। আবার চাইলে গড়ম পানিতে মিশিয়ে সাথে সাথেও খেতে পারেন। অবশ্য এটাকে খাওয়া নয় বরং পান করার মধ্যে ধরা হবে।
সবচেয়ে ভালো ফলাফলের জন্য গুড়ো করে বা চিরতার গুড়ো কিনে সেটি গড়ম পানিতে মিশিয়ে খেতে পারেন। আর যদি কোন ওষুধের মধ্যে দেওয়া থাকে, তাহলে সেই ওষুধের নিয়ম মেনে খাওয়াটা জরুরি।
খালি পেটে চিরতা খাওয়ার উপকারিতা
চিরতা খাওয়ার উপযুক্ত সময় সকালে খালি পেট অবস্থায়। তবে যদি গড়ম পানিতে খেতে চান, তাহলে সেটি যে কোন সময়ে খেতে পারেন।
খালি পেটে চিরতা খাওয়ার বিশেষ কিছু উপকারিতার মধ্যে রয়েছে বিশেষ যে সকল উপকারিতা তা হলোঃ
- খালি পেটে চিরতা খেলে হজম শক্তি বাড়ায়
- গ্যাস, বদহজম ও অ্যাসিডিটির সমস্যা কমায়
- চিরতা রক্ত পরিষ্কার করে
- ব্রণ, চুলকানি ও অন্যান্য স্কিনের সমস্যার দ্রুত সমাধান
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
- খালি পেটে খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়
- চিরতা লিভারের এনজাইম ভালো রাখে
- খালি পেটে লিভার দ্রুত টক্সিন মুক্ত হয়
- ওজন কমানোর কার্যকারি ভুমিকা পালন করে
- জ্বর থেকে রক্ষা করে
সতর্কতা অবলম্বন
চিরতা খাওয়ার ব্যাপারে বিশেষ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হতে পারে। উপরে যদিও কিছুটা লিখে রেখেছি, তবে এটি খাওয়ার জন্য আরো বেশ কিছু বিষয়ে লক্ষ্য করতে পারেন।
বিশেষ করে শুরুতে অল্প পরিমাণে খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। এবং অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এক দিনে বেশি খাওয়ার তুলনায় প্রতিদিন অল্প অল্প খাওয়াটা বেশ ভালো।
এই ধরনের সকল স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য পেতে আমাদের সাইটের নটিফেকেশন চালু করে রাখতে পারেন। একই সাথে নিচের দেওয়া হোয়াটসঅ্যাপে ফলো করে রাখতে পারেন।