বাংলাভোর অনলাইন পত্রিকা থেকে আপনাদের স্বাস্থ্যের জন্য আমরা গলা ব্যাথা হওয়ার বিশেষ কারন ও তার প্রতিকার সমন্ধে জানাচ্ছি। আশা করি আপনারা এখান থেকে ভালো একটি শিক্ষা অর্জন করতে পারবেন।
গলা ব্যথা
গলা খসখসে লাগছে? এই পরিচিত এবং অবাঞ্ছিত অনুভূতি অনেকের কাছেই সাধারণ সমস্যা। এটি একটি বিরক্তিকর অভিজ্ঞতা, এবং এর পেছনে থাকা কারণগুলো যেমন বিচিত্র, তেমনি এর প্রতিকারের জন্য প্রচলিত পদ্ধতিগুলোও বিভিন্ন রকম। চলুন, এই সমস্যা সম্পর্কে বিস্তারিত জানি।
ভাইরাসজনিত সংক্রমণ
ভাইরাসজনিত সংক্রমণ সাধারণত এই সমস্যার প্রধান কারণ। সাধারণ সর্দি এবং ফ্লু এর জন্য বেশ পরিচিত – এগুলো আপনার গলাকে যেন স্যান্ডপেপারের মতো শুষ্ক এবং খসখসে করে তোলে। এই ভাইরাসেরা গলার অভ্যন্তরীণ আস্তরণে প্রদাহ এবং জ্বালা সৃষ্টি করে।
একে আপনি একটি ছোট সেনাবাহিনীর আক্রমণের মতো ভাবতে পারেন। এ ধরনের ক্ষেত্রে বিশ্রাম, প্রচুর তরল পান, এবং কিছুটা সময় দেওয়া সবচেয়ে কার্যকর। এতে শরীর নিজেই এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে।
ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ
ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণও গলার ব্যথার জন্য দায়ী হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, স্ট্রেপ থ্রোট একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত সমস্যা, যা অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসা প্রয়োজন করে।
এটি হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়; সঠিক রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। উপেক্ষা করলে এটি গুরুতর জটিলতায় পরিণত হতে পারে। স্ট্রেপ থ্রোট সাধারণত গলা লাল হয়ে যাওয়া এবং উচ্চ জ্বরের মতো তীব্র উপসর্গ নিয়ে আসে, যা এড়িয়ে যাওয়া কঠিন।
জ্বালানির কারণসমূহ
সংক্রমণের বাইরেও কিছু জিনিস গলা ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, শীতকালের শুষ্ক বাতাস। অথবা আপনি যদি একজন উত্সাহী গায়ক হন, তবে অতিরিক্ত কণ্ঠস্বর ব্যবহার গলার উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
এমনকি অ্যাসিড রিফ্লাক্সের মতো সাধারণ সমস্যাও গলার ক্রনিক জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে। এ ধরনের ক্ষেত্রে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। যেমন, পর্যাপ্ত পানি পান করা, জ্বালানির কারণগুলো এড়িয়ে চলা এবং প্রয়োজনে গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া।
গলা ব্যথা হলে কি ঔষধ খাওয়া উচিত
ওষুধের মধ্যে বিশেষত ট্যাবলেট বা লজেঞ্জ বেশ কার্যকর হতে পারে। এগুলো সাধারণত গলা ব্যথা কমানোর জন্য তৈরি। কিছু ওষুধে ব্যথানাশক উপাদান থাকে, যা গলার ব্যথা কমায়, আবার কিছুতে প্রদাহ কমানোর উপাদান থাকে।
তবে এটি মনে রাখা জরুরি যে, এগুলো কেবল উপসর্গ উপশম করে, মূল কারণ নিরাময় করে না। নির্দেশিকা ভালোভাবে পড়ে ব্যবহার করতে হবে এবং যদি উপসর্গ দীর্ঘস্থায়ী হয় বা বাড়ে, তবে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। নিজে নিজে দীর্ঘ সময় ধরে ওষুধ সেবন না করাই ভালো। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কারণ শনাক্ত করা এবং সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করাই সবচেয়ে সঠিক পদ্ধতি।
তাই গলা ব্যথার প্রতিকার সাময়িক হতে পারে, তবে দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের জন্য আপনার স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিন।