কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

0
92
কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

কিডনি মানবদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ন একটি অংশ। এই অংশের বিশেষত্ব অনেক বেশি। তাই এই বিশেষ অঙ্গের সমন্ধে যথেষ্ট কেয়ারফুল হওয়া বা যত্নশীল হওয়াটাও অনেক গুরূত্বপুর্ন। আর কিডনির যে কোন রোগ হলে বা সমস্যা হলে সেটি সমন্ধে ভালোভাবে জেনে নিয়ে তার উপযুক্ত চিকিৎসা করিয়ে নেওয়াও একটি গুরুত্বপূর্ন কাজ।

আজ আমরা আপনাদের প্রিয় বাংলা ভোর অনলাইন পত্রিকার মাধ্যমে আপনাদের সাথে এই গুরুত্বপূর্ন অঙ্গের বিশেষ আলোচোনা করবো। এই কিডনির কি কি রোগ হয় এবং সেগুলো কি কি ধরনের লক্ষনের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়ে থাকে, সেই সকল লক্ষণগুলো জানাবো। এবং কিডনির বিশেষ কোন রোগের কি ধরনের চিকিৎসা করা প্রয়োজন তাও এই পোস্টের মাধ্যমে জানাবো।

কিডনি কি কি কারণে প্রয়োজন

আমরা যখন জানতে পারি, যে এই বিশেষ জিনিসটি আমাদের কি কি বিশেষ কারনে প্রয়োজন রয়েছে, তখন আমরা সেই জিনিসের উপরে যথেষ্ট সচেতন হয়ে থাকি। আবার অন্যদিকে আমরা যখন জানতে পারি যে এই প্রয়োজনীয় জিনিসটি আমাদের থেকে নিত্যদিন ক্ষতিগ্রহস্থ হয়ে আমাদের থেকে বিদায় নিচ্ছে, তখন আমরা সেই জিনিসের প্রতি আগ্রহী হয়ে থাকি।

তবে উচিৎ ছিল আমাদের ভালো থাকা অবস্থায় ই সেই জিনিসের প্রতি যত্নশীল হওয়া। তাই এই দিক থেকে বলতে গেলে আমাদের দেহে শুধু কিডনিয় একাই নয়, এরকম আরো অনেক অনেক অঙ্গ রয়েছে। আমাদের উঁচিৎ সেই সকল অঙ্গ সমন্ধে যথেষ্ট যত্নশীল হওয়া। এক্ষেত্রে আপনারা সকল আপডেট পেতে আমাদের সাইটের সাথে থাকতে নিচের হোয়াটসঅ্যাপে ফলো করা থেকে নটিফেকেশন চালু করে রাখার মতো যে কোন অপশন ব্যবহার করতে পারেন।

কিডনি আমাদের দেহের বিশেষ যে সকল কারনে বেশি গুরুত্বপূর্ন তার মধ্যে রয়েছেঃ

  • রক্ত পরিশোধন
  • বর্জ্য অপসারণ
  • পানি ও ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য বজায়
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
  • লাল রক্তকণিকা উৎপাদনে সহায়তা
  • অ্যাসিড-বেস ভারসাম্য রক্ষা
  • হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা
  • হরমোন নিঃসরণ ও নিয়ন্ত্রণ
  • শরীর থেকে অতিরিক্ত ওষুধ ও টক্সিন দূর করা
  • গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ
  • দেহের সামগ্রিক ভারসাম্য বজায় রাখা

তবে কিডনির মহৎত্ব এখানেই শেষ নয়। তার রয়েছে আরো শত শত গুণ। বিশেষ করে উভয় পাশের কিডনি থাকার ফলে একজন মানুষ স্বুস্থ্য ভাবে ভারি বস্তুকে বহন থেকে শুরু করে অনেক কাজে দক্ষতা পেতে পারে। একই সাথে দেহের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাজে কিডনি অংশগ্রহন করতে পারে।

কিডনি রোগের তালিকা

সাধারনত কিডনিতে বেশ কিছু রোগের লক্ষন দেখা দিতে পারে। তার মধ্যে অন্য়তম ১০ টি কিডনির রোগের মধ্যে রয়েছে নিচের তালিকা। এই রোগ গুলো কিডনিতে বেশি লক্ষ্য করা যায়।

  • ক্রনিক কিডনি ডিজিজ (CKD)
  • অ্যাকিউট কিডনি ইনজুরি (AKI)
  • নেফ্রাইটিস (Nephritis)
  • কিডনিতে পাথর (Kidney Stones)
  • নেফ্রোটিক সিনড্রোম (Nephrotic Syndrome)
  • পলিসিস্টিক কিডনি ডিজিজ (PKD)
  • ডায়াবেটিক নেফ্রোপ্যাথি (Diabetic Nephropathy)
  • হাইপারটেনসিভ নেফ্রোপ্যাথি
  • ইউরেমিয়া (Uremia)
  • কিডনির সংক্রমণ (Pyelonephritis)

তবে এই রোগের ভিন্ন ভিন্ন নামেও পরিচিতি থাকতে পারে। বিশেষ করে অঞ্চলের ভিত্তিতে বা গ্রাম্য ভাষায় ভিন্ন ভিন্ন ভাবে ডাকতে লক্ষ্য করা যেতে পারে।

কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যথা হয়

কিডনিতে রোগ হলে বা কিডনিতে আঘাত প্রাপ্ত হলে অথবা কিডনিতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিলে কিডনি অবস্থিত স্থানে ব্যাথা বা অন্যান্য রূপের দেখা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে সহজেই বোঝা যাবে যে এই সমস্যাটি কিডনিতে সমস্যা হওয়ার প্রভাব দেখা যাচ্ছে।

কিন্তু অন্যান্য ক্ষেত্রে এর ভিন্নতা দেখা যেতে পারে, বিশেষ করে যেহেতু কিডনি দেহের রক্ত শোষন করে পরিষ্কার করে, পানি, লবন, চিনি, গ্লুকোজসহ ইত্যাদি মাত্রা নিয়ন্ত্রন করে থাকে তাই কিডনিতে সমস্যার ফলে এই সকল সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে এবং ফলে সেটির ক্ষতির প্রভাব ফেলতে পারে এবং কিডনির অবস্থান অনুযায়ী ব্যাথা না হলে অন্যান্য স্থানে ব্যাথা বা রি রি করতে পারে। এছাড়াও আরো অন্যান্য সমস্যা লক্ষ্য করা যেতে পারে।

বিশেষ করে কিডনিতে সমস্যার ফলে কিছু কিছু স্থানে ব্যাথা তৈরি হতে পারে এবং সমস্যা দেখা যেতে পারে। তার মধ্যে অন্যতম হলোঃ

  • কোমরের দুপাশে(কিডিনর অবস্থান)
  • পাঁজরের নিচ থেকে কোমরের ওপরে
  • তলপেটে
  • কুঁচকি ও ঊরুর দিকে
  • পেটের উপরের অংশে

কিডনি রোগের লক্ষণ

কিডনির সুস্থতা সমন্ধে আমরা আগামীতে কখনো বিশেষ আলোচনার মাধ্যমে জানিয়ে দিব। তবে এই পোস্টের মাধ্যমে আপনারা কিডনি জনিত রোগ ও বিভিন্ন সমস্যা সমন্ধে জেনে নিতে পারেন এবং কিডনির বিশেষ কিছু সমস্যার প্রতিকার সমন্ধে জেনে নিতে পারেন। কিডনিতে যে সকল রোগ হতে পারে, সেই রোগের সমন্ধে উপরের দিকে তালিকা দেওয়া রয়েছে, তবে এখানে এই রোগের বিশেষ লক্ষণগুলো সমন্ধে জানানো হলো।

  • পিঠের বা কোমরের দুপাশে ব্যথা
  • প্রস্রাবে পরিবর্তন
  • হাত-পা, মুখ বা চোখ ফুলে যাওয়া
  • উচ্চ রক্তচাপ
  • অতিরিক্ত ক্লান্তি ও দুর্বলতা
  • ক্ষুধামন্দা ও বমি বমি ভাব
  • ঘন ঘন ঠান্ডা লাগা বা শরীরে শীত অনুভব করা
  • ঘুমের সমস্যা

তবে বিশেষ করে প্রসাবের রঙ পরিবর্তন, ঘন ঘন প্রসাব, পাতলা পায়খানা, প্রসাবের ঝাঝানো গন্ধ, প্রসাব কমে যাওয়সহ ইত্যাদি বেশ লক্ষ্যনীয়। তার সাথে আবার কখনো কখনো খুদা কমে যাওয়, ঘুম কম হওয়া, হাত পা চোখ ফুলে যাওয়া, হাই প্রেশার, অতিরিক্ত ক্লান্তি বোধ করাসহ ইত্যাদি রয়েছে।

আপনি আপনার দৈহিক অবস্থা সমন্ধে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করলে তিনি আপনার সমস্যা সমন্ধে সহজে বুঝে সঠিক চিকিৎসা দিতে সক্ষম হবেন। এবং কোন রোগের ক্ষেত্রেই সময় নষ্ট করে রোগ বাড়তে দেওয়া উঁচিৎ নয়।

কিডনি ভালো রাখার উপায়

সাধারন ভাবে বলা চলে, কিডনি বিশেষ কিছু নিয়ম নিতি মেনে চলার মাধ্য়মেই ভালো রাখা সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে কিছু কিছু বর্জনীয় কাজও গুরুত্বপূর্ন। তার মধ্যে অন্যতম রয়েছে কিছু খাবার খাওয়া, কিছু খাবার পরিত্যাগ করা, কিছু অভ্যাস করা, কিছু অভ্যাস পরিত্যাগ করা, কিছু জিনিসের ব্যবহার করা, কিছু জিনিস এড়িয়ে চলা। বিশেষ কিছু হলোঃ

  • প্রচুর পানি পান করুন
  • স্বাস্থ্যকর ও সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন
  • রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন
  • ধূমপান ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন
  • পর্যাপ্ত ঘুমান
  • মানসিক চাপ কমান
  • ব্যথানাশক ওষুধ এড়িয়ে চলুন
  • ময়লা স্থান, ময়লা খাবার ও ময়লা পানি এড়িয়ে চলুন

তবে এখানেই শেষ নয়। একজন স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে জানার শেষ নেই। নিজেকে স্বাস্থ্য সম্মত মানুষ করে সুস্থতার সাথে বাঁচতে শিখুন। সেজন্য এই ধরনের আরো পোস্ট দেখুন, আমাদের সাইটের সাথে থাকুন আগামি পোস্টে কিডনি ভালো রাখার সমন্ধে তথ্যসম্মত পোস্ট পাবেন।

কিডনি রোগের প্রতিকার

কোন রোগ একবার দেহের মধ্যে অবস্থান করতে পারলে, সে আর সহজে ক্ষতম হতে চায় না। আর যদি সেটি দেহের কোন অংশ হয় তাহলে তো তার প্রভাব অনেকগুন বেড়ে যাবেই। তবে আত্মবিশ্বাস হয়তো মানুষকে বাঁচিয়ে রাখতে সর্বোচ্চ সহায়তা করে। কেননা মারা যাওয়ার জন্য রোগের থেকেও বেশি প্রভাব ফেলে দুর্চিন্তা। যা একজন সুস্থ মানুষকেও একেবারে গিলে খেতে সক্ষম।

আপনি যখন কোন ভুল ব্লগে প্রবেশ করবেন, বা কোন ভুল স্থান থেকে তথ্য সংগ্রহ করবেন, তখন আপনাকে এমন ভাবে হেনস্থা করবে যাতে আপনি চিন্তিত হয়ে মনে করবেন এখন ই হয়তো মারা যেতে পারেন। তবে বাস্থবে তা ঠিক নয়।

এজন্যই বাচ্চারা কঠিনতম রোগ থেকেও ভিরে দাড়াতে পারে, কেননা তাদের চিন্তার প্রভাব ক্ষতি করতে সক্ষম নয়। তাই আগে মস্তিস্ক সুস্থ করুন তার পরে দেহ। দেহ হীনা মানুষ ও বাঁচতে সক্ষম আর মস্তিস্কহীনা দেহেরও কোন দাম থাকে না। তাই পাগল হবেন না।

রোগ আসার আগে ঘরোয়া উপায়ে প্রতিরোধ করা সম্ভব হলেও রোগে আক্রান্তের চরম পর্যায়ে পৌছে গেলে আপনি আর ঘরোয়া উপায়ে মুক্তির আশা না করে ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন। সেখান থেকে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে উপযুক্ত চিকিৎসা নিন। তাহলে অল্প সময়ে আবার সুস্থ জীবন ফিরে পাবেন। আর পুরোনো দিনের পন্থা অবলম্বন করলে মুক্তি পেতে পারেন, তবে সঠিক রোগ নির্নয় না করতে পারায় বা দৈহিক অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা না নিতে পারলে জীবন নাশক হতে পারে।

একই সাথে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে উপযুক্ত চিকিৎসা নিয়ে দ্রুত সুস্থ হওয়া অতি উত্তম। তাই রোগের চরম পর্যায়ে তার সর্বোচ্চ প্রতিরোধ হিসেবে উপযুক্ত চিকিৎসা আর পর্যাপ্ত যত্নই হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে। হয়তো চিকিৎসার জন্য ডাক্তার আর সেবার জন্যই সহকারী নার্সের ব্যাবস্থা করা হয়েছিল।

আপনার সুস্থতাই আমরা কামনা করি, আপনাদের প্রিয় বাংলা ভোর থেকে সেবা নিন, আর সাথে থেকে সেবা করুন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here