আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় অতিষ্ঠ জনজীবন। আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে সারাদেশে দিনে গরম, শেষ রাতে ঠান্ডা পড়ে। আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে বিভিন্ন প্রভাব দেখা দেয়,তাতে বাড়ছে হাঁচি ,কাশি ,জ্বর,সর্দির মত সমস্যা। চিকিৎসকদের ভাষায় এটি মৌসুমী জ্বর-ঠান্ডা নামে পরিচিত।এ ধরনের সমস্যা সাধারণত শরৎ ও শীত ঋতুতে বেশি দেখা যায় ।
কারন ,এই সময় তাপমাত্রার উঠানামা বেশি হয় এবং পরিবেশ আর্দ্রতা কমে যায়।এর ফলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং সহজে বাইরে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়। বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয় বয়স্ক ,শিশু ও শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগা রোগীদের। চিকিৎসকরা বলছেন,”বারবার আবহাওয়া পরিবর্তনের কারনে এই ভোগান্তি বাড়ে”।
আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট প্রভাবসমুহ:
ক. শারীরিক প্রভাব:
১. ঠান্ডা-জ্বরের লক্ষণ:•সর্দি কাশি ও গলা ব্যথা,
•নাক দিয়ে পানি পড়া বা নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া,
•জ্বর মাথা ব্যথা ও শারীরিক দুর্বলতা।
অন্যান্য শারীরিক সমস্যা:
•শ্বাসকষ্ট: আবহাওয়া ঠান্ডা হলে বাতাস শুষ্ক হয়ে যায় ,যা অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্টের ঝুঁকি বাড়ায়।
•এলার্জির সমস্যা: আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে তীব্র এলার্জি দেখা দিতে পারে।
•জয়েন্টের ব্যথা: না বলা হয় রক্ত সঞ্চালন কমে যাওয়ায় বাতের ব্যথা বৃদ্ধি পায়।
•ত্বকের শুষ্কতা: ঠান্ডা আবহাওয়ায় ত্বকের আর্দ্রতা কমে যায়, ত্বক শুষ্ক ও ফেটে যেতে পারে।
•মেজাজের পরিবর্তন: ঠান্ডা আবহাওয়ায় “সিজনাল এফেক্টিভ ডিসঅর্ডার” (SAD)হতে পারে,যা মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে।
ক্লান্তিভাব: আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে শরীর অলস ও ভারী অনুভূতি সৃষ্টি হয়।
পরিবেশগত প্রভাব:
•পরিবেশ দূষণ: শীতকালে ধোঁয়া এবং ধূলিকণা বাতাসে ভাসমান থাকে, যা শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা সৃষ্টি করে,
•শুষ্কতা: ঠান্ডা আবহাওয়ায় পরিবেশের আদ্রর্তা কমে যায়,
•তাপমাত্রার তারতম্য: তাপমাত্রা বাড়াও কমার ফলে ফসল এবং জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
প্রতিরোধের উপায়:
১.পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন,
২. গরম পোশাক পরিধান করুন,
৩. গরম পানীয় পান করুন,
৪. স্বাস্হ্যকর খাবার খান;বিশেষ করে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার। ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়,
৫. বাইরে বের হওয়ার সময় মুখ ঢেকে রাখুন,
৬. বাইরের খোলা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা,
৭. প্রচুর পানি পান করুন।
আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় শরীরের প্রতি যত্নশীল হওয়ায় সুস্থ থাকার মূল চাবিকাঠি। সঠিক পরিচর্যা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিলে ঠান্ডা-জ্বর এবং শারীরিক সমস্যা গুলো এড়ানো সম্ভব।