প্রবাসীরা বাংলাদেশের একটি বিশেষ ও অন্যতম রত্ন ভান্ডার। বাংলাদেশের সকল উন্নয়ন এবং অর্থিনীতির ধারা চলমান রাখতে এই প্রবাসীদদের ভুমিকা একটি বিকল্পহীন ভুমিকা। এই ভুমিকার যেন কোন বিকল্প পথ ই নেই।
দেশের ও যেমন প্রবাসীরা অনেক ভালোবাসে তার সাথে আবার দেশ ও তাদের জন্য ভালোবাসা জমা করে রাখে। দেশের ও তারা উপকার করে, সেই সাথে দেশ থেকেও তারা অনেক প্রকারের উপকার পেয়ে থাকে। তার মধ্যে অন্যতম কিছু হলোঃ
- সহজে কাজের ট্রেনিং
- সহজে ভিসা পার্সপোর্ট পাওয়া
- প্রোবাসীদের জন্য বড় মাপের বিশেষ লোন
- দেশে টাকা পাঠানোোর বিশেষ সুযোগ সুবিধা
- বিদেশের বিভিন্ন সরকারের সাথে ভালো সম্পর্ক করে সেখানে দেশের কর্মিদের কাজের ব্যাবস্থ
- প্রবাসীদের প্রবাসে নিরাপত্তা সহ অনেক অনেক কিছু।
আমরাও এই পত্রিকার মাধ্যমে প্রবাসিদের প্রতিদিন টাকার রেট সমন্ধে জানিয়ে দেই, ফলে প্রবাসিরা দেশে টাকা পাঠালে তারা লাভবান হতে পারে।
যা-ই হোক, আমরা আজ বিশেষ কিছু তথ্য শেয়ার করবো, তাই যারা প্রবাসে থাকেন বা প্রবাসে যাওয়ার কথা ভাবতেছেন, তাদের এই পোস্টটি বিশেষ ভাবে উপকারি হবে। এই পোস্টে আপনারা প্রবাসী লোন সমন্ধে জানতে পারবেন।
“প্রবাসী কর্মীদের জন্য ১১টি ব্যাংকের লোন অফার: ঋণের পরিমাণ, সুদের হার ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস, শর্তাবলী ও প্রক্রিয়া’।
কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয় এবং তাদের সুদের হার কত
এই অংশে আপনারা জানতে পারবেন যে কোন ব্যাংক কত পরিমানে প্রবাসীদের লোন দেয়, এবং কত পার্সেন্ট করে সুদ কাটে, সেই সাথে কি কি প্রয়োজনিয় কাগজ বা ডোকোমেন্ট লাগে সেই সকল বিস্তারিত তথ্য।
১. প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক
প্রবাসী কল্যান ব্যাংকটা নামেই যেন প্রবাসীদের সুবিধার কথা মাথায় তোলে। যদিও বর্তমানে প্রবাসী হসপিটাল, প্রবাসী সংবাদ পত্র থেকে শুরু করে ব্যবসার বিশেষ একটি অংশ জুড়ে প্রবাসী শব্দটাকে শুধু লাভের আশায় ই ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে সেখান থেকে প্রবাসি ব্যাংক কিছুটা হলেও ভালো বলে আমরা অনলাইনের বিভিন্ন তথ্য থেকে জেনেছি। প্রবাসী কল্যান ব্যংক থেকেও প্রবাসে যাওয়ার জন্য বিশেষ লোন নিতে পারেন।
ঋণের ধরন:
অভিবাসন ঋণ: বিদেশে যাওয়ার খরচ মেটানোর জন্য।
পুনর্বাসন ঋণ: দেশে ফিরে ব্যবসা শুরু করতে বা পুনর্বাসনের জন্য।
ঋণের সীমা: সর্বোচ্চ ৫০ লক্ষ টাকা (জামানতবিহীন সর্বোচ্চ ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত)।
সুদের হার:
পুরুষ: ৯%
নারী: ৭%
পরিশোধ মেয়াদ: সর্বোচ্চ ১০ বছর।
ডকুমেন্টস:
পাসপোর্ট, ভিসা, আয়ের প্রমাণ, রেমিট্যান্স তথ্য, জাতীয় পরিচয়পত্র।
বিশেষ শর্ত:
৫ লক্ষ টাকার বেশি ঋণে জামিনদারের প্রয়োজন।
যোগাযোগ: নিকটস্থ শাখায় আবেদন।
২. সোনালী ব্যাংক
সোনালী ব্যাংক যেন আমাদের চির চেনা ব্যাংকগুলোর মধ্যে অন্যম একটি ব্যাংক। বিশেষ করে সোনালী ব্যাংক লোন দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশ এগিয়ে রয়েছে। তারা ক্ষুদ্র ব্যাবসা থেকে শুরু করে খামার বা বড় বড় ব্যাবসার জন্য বিশেষ লোন দিয়ে থাকে। আর এই সোনালী ব্যাংক থেকে প্রবাসীদের ও বিশেষ লোনের ব্যাবস্থা করা আছে।
ঋণের ধরন:
বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য অভিবাসন ঋণ।
দেশে ফিরে পুনর্বাসন ঋণ।
ঋণের সীমা: নির্ধারিত হয়নি (ব্যক্তিগত আলোচনা সাপেক্ষ)।
ডকুমেন্টস:
পাসপোর্ট, ভিসা, আয়ের প্রমাণ।
সুবিধা: সহজ কিস্তি পদ্ধতি।
যোগাযোগ: ব্যাংকের শাখায় সরাসরি যোগাযোগ।
৩. অগ্রণী ব্যাংক
দেশের সেরা কিছু ব্যাংকের নাম তুলতেই চলে আসে, এই অগ্রণী ব্যাংক। সেখানেও অনেক ধরনের লোনের সুবিধা পাওয়া যায়। সেই সাথে এই অগ্রণী ব্যাংক আসলে সরকারের কিছুটা বিষয়ে বিশেষ ভাবে ভুমিকা রাখে বলে ধারনা করা যায়। সেই সাথে এই অগ্রণী ব্যাংক থেকেও প্রবাসীদের বিশেষ লোনের ব্যাবস্থা করা হয়েছে।
ঋণের ধরন:
বিদেশে যাওয়ার খরচের জন্য অভিবাসন ঋণ।
দেশে ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু বা পুনর্বাসনের জন্য ঋণ।
ঋণের সীমা: আলোচনা সাপেক্ষ।
সুদের হার: ৯-১০%
ডকুমেন্টস:
জাতীয় পরিচয়পত্র, আয়ের প্রমাণ।
পরিশোধ পদ্ধতি: মাসিক কিস্তি।
যোগাযোগ: ব্যাংকের শাখায় যোগাযোগ।
৪. জনতা ব্যাংক
একটা সময়ে প্রবাসীদের অন্যতম আস্থার যায়গা ছিল জনতা ব্যাংক। এই জনতা ব্যাংকেই তারা প্রতি মাসে রেমিটেন্স পাঠাতো। যদদিও এখন দেশের উন্নতির ফলো আরো বিভিন্ন মাধ্যম সহ বিভিন্ন ব্যাংকে রেমিটেন্স পাঠায় তারা। ঠিক তার ই সাথে, জনতা ব্যাংকে থেকেও প্রবাসিদের লোন দিয়ে থাকে।
ঋণের ধরন:
প্রবাসী কর্মসংস্থানের জন্য অভিবাসন ঋণ।
পুনর্বাসনের জন্য বিশেষ ঋণ।
সুবিধা: রেমিট্যান্সের মাধ্যমে কিস্তি পরিশোধ।
ডকুমেন্টস: পাসপোর্ট, ভিসা, রেমিট্যান্স তথ্য।
৫. রূপালী ব্যাংক
শুধু রূপেই রূপালী ব্যাংক নয়, তার আছে অনেক গুন। রূপালী ব্যাংক থেকেও ভালো পরিমানে লোন দিয়ে থাকে যারা বিদেশে যেতে চায় বা প্রবাসে বিভিন্ন ব্যাবসা করতে চায় তাদের জন্য।
ঋণের ধরন:
প্রবাসীদের পুনর্বাসন ও ব্যবসার জন্য ঋণ।
সুবিধা: সহজ শর্তে ঋণ বিতরণ।
পরিশোধ পদ্ধতি: আলোচনা সাপেক্ষ।
আরো তথ্যের জন্য ব্যাংকে যেতে পারেন।
৬. ব্র্যাক ব্যাংক
বাংলাদেশের বিশাল অংশ জুড়েই ব্রাক ব্যাংক অবস্থান করে রয়েছে। এই ব্রাক ব্যাংকেও বিশেষ কিছু ধরনের বড় বড় লোন দিয়ে থাকে, সেই সাথে কিন্তু প্রবাসী লোন ও দেয় তারা।
ঋণের ধরন:
পুনর্বাসন ও ক্ষুদ্র ব্যবসা।
সুবিধা:
রেমিট্যান্সের ওপর নির্ভর করে সুবিধা প্রদান।
ডকুমেন্টস:
পাসপোর্ট, ভিসা, রেমিট্যান্স তথ্য।
৭. ডাচ্-বাংলা ব্যাংক (DBBL)
দেশের বিশেষ একটি ব্যাংক হলো ডাচ বাংলা ব্যাংক। এই ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে সাধারনত তেমন বেশি কোন লোন দেয় না। এটি একটি সহজ লেনদেনের সিস্টেম হিসেবে চালু করা হয়। এবং সেই সাথেই ডাচ বাংলা ব্যাংকে মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেমও বেশ জনপ্রিয়। তারা বিশেষ ভাবে প্রবাসীদের লোন দিয়ে থাকে, তবে সেটি বিশেষ আলোচনার সাপেক্ষে।
ঋণের ধরন:
পুনর্বাসন ঋণ।
সুবিধা: রেমিট্যান্স কেন্দ্রিক ঋণ।
সুদের হার: আলোচনা সাপেক্ষ।
৮. ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (IBBL)
ইসলামিক সরিয়াহ মেনে চলা বা শরিয়াহ অনুযায়ী লেনদেন করা বিশেষ কিছু ইসলামিক ব্যাংক আছে, তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো ইসলামিক ব্যাংক। তারা বিশেষ কিছু স্থানে সরিয়াহ অনুযায়ী ইনভেস্ট করে থাকে, যা লাভের উপরে মুনফা নেয়। আর এই লোনটি হালাল তরিকায় দেওয়া হয়।
ঋণের ধরন:
শরীয়াহ মোতাবেক অভিবাসন ও পুনর্বাসন ঋণ।
সুদের হার: মুনাফা ভিত্তিক (শরীয়াহ অনুযায়ী)।
ডকুমেন্টস:
ভিসা, পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র।
৯. সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (SIBL)
ইসলামী সরিয়াহ মেনে চলা আরো অনেক ব্যাংকের মধ্যে অন্যতম সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংক। এই ব্যাংকেও রিতি মতো ইসলামি সকল নিতী মালা মেনে লেনদেন করে থাকে। সেই সাথে তারাও বিশেষ ইসলামি নিতিমালা মেনে ইনভেস্ট করে, সেখান থেকে লাভের উপরে মুনফা নিয়ে থাকে। আর এটিও হালাল তরিকায় চলমান।
ঋণের ধরন:
প্রবাসী পুনর্বাসন ঋণ।
সুবিধা:
শরীয়াহ ভিত্তিক ঋণ।
ডকুমেন্টস: জামিনদারের তথ্য ও আয়ের প্রমাণ।
১০. সিটি ব্যাংক
সিটি ব্যাংকে বিশেষ কিছু সুযোগ সুবিধার মধ্যে অন্যতম একটি সুবিধা হলো, সেখানে প্রবাসীদের ব্যাবসার জন্য লোন দিয়ে থাকে। তাদের লোনের নিতিমালাগুলো হলো
ঋণের ধরন:
প্রবাসীদের ব্যবসার জন্য ঋণ।
ডকুমেন্টস:
ভিসা, পাসপোর্ট, আয়ের প্রমাণ।
১১. ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (UCB)
ব্যাবসা বানিজ্যের জন্যই সাধারনত কমার্শিয়াল ব্যাংকগুলো খুব বেশি জনপ্রিয়। ঠিক এই জনপ্রিয়তার ফাকে আবার তারা ব্যাবসার জন্য বিশেষ সাহায্য শরূফ লোন ও দিয়ে থাকে, তাদের মধ্যে বেশি এমাউন্টের লোন ই বেশি দেওয়া হয়। এই ব্যাংকটিও প্রবাসীদের বড় অংকের লোন দিয়ে থাকে।
ঋণের ধরন:
পুনর্বাসন ও ব্যবসায়িক ঋণ।
সুবিধা: সহজ শর্তে ঋণ বিতরণ।
সাধারণ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস:
- পাসপোর্ট ও ভিসার ফটোকপি।
- জাতীয় পরিচয়পত্র।
- জামিনদারের তথ্য।
- আয়ের প্রমাণ।
- আবেদন ফরম পূরণ।
নোট:
প্রত্যেক ব্যাংকের শর্ত ও নিয়ম আলাদা হতে পারে। সঠিক তথ্যের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শাখায় যোগাযোগ করা উত্তম। এই পোস্টে শুধু সুদের হার এবং ব্যাংকের লিস্টে ফোকাস করা হয়েছে। সেই সাথে আলোচনায় কম বেশি পরিমানে লোন দিয়ে থাকে।