গত ২৬ নভেম্বর ভোরে কোন একটি জেদ ধরে শেরপুরে দোজা পীরের দরবার শরিফ হামলা করে ভেঙে ফেলার বিষয়টি বর্তমানে খুবই ভাইরাল একটি টপিক। তবে এই দরবার শরিফ নিয়ে এই পোস্টে বিশেষ কোন মন্তব্য করবো না।
ভন্ড পীরে ছেয়ে যাচ্ছে
পীর একটি আবেগ আর অনুভতির নাম হয়ে দাড়িয়েছে। আপনি জানেন কি পীর আসলে কেন হয় আর কেন মানা হয় ইসলাম ধর্মে পীর।
পীর শব্দ ফারসি ভাষা থেকে এসেছে। পীর আসলে মুরব্বিকে মানা হয়। অর্থাৎ সাধারন ভাষায় একটু বুদ্ধিমান বয়ষ্ক লোককে পীর মানা হয়, যাতে তার কাছে নিজের সকল কাজের বিষয়ে ভালোভাবে শেয়ার করে কোনটা ভালো কজ আর কোনটা খারাপ কাজ সেটি সমন্ধে জানা যায়।
শুধু তাই নয়, তার মাধ্যমে ভালো কাজ সমন্ধে ভালো করে জেনে নিয়ে, সেই ভালো কাজ করতে হবে। আর ভালো কাজ করা সমাজ এবং মানব জাতির জন্য অত্যান্ত জরুরি একটি বিষয়। সেই সাথে মহান আল্লাহর কাছ তো আছেই তার বিশেষ প্রতিদান।
অপর দিকে খারাপ কাজ সমন্ধে জেনে সেগুলো ছেড়ে দিতে হবে। ফলে সমাজের ও ভালো আর খারাপ কাজেই আল্লাহ পাপ লিখে দেন, তাই সেটি পরিত্যাগ করলে আল্লাহ জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিবেন।
কিন্তু বর্তমান সময়ে ঠিক তার উল্টো হয়ে যাচ্ছে। সমাজে পীর ঠিক ই রয়েছে। সেখানে সবাই বায়াত ও হচ্ছে। কিন্তু নেই কোন ভালো কাজ। বরং সেই পীরের দরবারে বসে যত প্রকারের অবৈধ কাজ তাই করা হচ্ছে। বিশেষ করে মাদক, নারী পুরুষের অবৈধতা এবং বোকা বানিয়ে মানুষের সম্পদ ভোগ করা অন্যতম বিষয়ে পরিনিত হয়েছে।
তার ই সাথে আবার মাঝে মাঝে সেই দরবারের বিশেষ লোকের বিভিন্ন কথাবার্তা ও বিভিন্ন অপকর্মের ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ও হয়ে যাচ্ছে। তাহলে আর সেখানে ভালো রইল কোথায়।
বিশেষ ভাবে মানুষকে বিভিন্ন ভাবে চিকিৎসার কথা বলেই বেশির ভাগ সময়ে এই সকল দরবারে নিয়ে যায়। কিন্তু চিকিৎসার নামে অর্থ তো ঠিক ই নেয়। তবে তার সঠিক কোন চিকিৎসা হয় না ফলে সেটি বেশ জটিল অবস্থা ধারন করে।
মাঝে মাঝে ধর্ম বিরোধী কর্নকান্ড সহ রাষ্ট ও সমাজ বিরোধী কর্মকান্ডও দেখা যায় সেখানে। বিশেষ করে গাজা বা মাদক সেবনকে ওষুধ বলা ও ধর্মকে না মেনে নতুন নতুন নিয়ম প্রচার করা অন্যতম।
সব পীর খারাপ নয়
সব পীর খারাপ নয়। তবে মাঝে মাঝে দেখা যায়, পীর মারা গেলে তার কবরকে উচু করে সেখানে মন্দিরের মতো করে ফেলে। আর সেই মৃত পীরকে ঘীরে বিভিন্ন কর্মসুচি পালন করা হয়। যার মধ্যে অন্যতম সেই কবরে সেজদা করা।
এটি একজন মুসমানকে ধর্ম থেকে বিচ্ছিত করে ফেলে। তার সাথে দেখা যায় সাধারন মানুষকে পীরের নামে মান্নত ও পীরের বাড়িতে বিভিন্ন অর্থ সম্পদ বা খাবার নিয়ে আসা। যা বর্তমান সময়ে পীরের রমরমা ব্যাবসা হয়ে উঠেছে।
আর পীরের নামে বা অন্য কোন মানুষের নামে মান্নত করা সম্পুর্ন হারাম। কিন্তু পীরের দরবারের লোকজন লোভে পরে সেখানে মান্নত করতে বলে, যা নুলত সেখানে থাকা লোকগুলোই আত্মসাৎ করে ফেলে।
তাই পীর সমন্ধে যথেষ্ট সচেতন হউন। খারাপ পীর এবং ভালো পীরের মৃত্যুর পরে খারাপ লোকের আস্থানা উচ্ছেদ করে ফেলা খুবই দরকার। পীরের কবরও সাহাবীদের মতোই সাধারন কবরস্থান বা কবরের নিতি মানে এমন স্থানে হতে হবে। কোন ঘরে বা বিশেষ কোন স্থানে কবর দিয়ে সেখানে সেবা বা পুজা করা যাবে না।