ধানমন্ডিগামী একটি ‘রমজান পরিবহন’ বাসের হেলপারকে প্রকাশ্যে জুতা দিয়ে মারধর ও গালিগালাজ করার পরও উল্টো হেলপারকেই গ্রেপ্তারের ঘটনায় জেন্ডার বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর, আইন প্রয়োগে পুরুষদের প্রতি পক্ষপাতের বিষয়টি তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
ঘটনার প্রেক্ষাপট:
ভাইরাল হওয়া ভিডিও এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য অনুযায়ী, বাসের ভাড়া বা সিটে বসা নিয়ে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে এক নারী যাত্রী বাসের হেলপারকে জুতা দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকেন এবং কটু কথা বলেন। ভিডিওতে হেলপারকে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করতে দেখা গেলেও তিনি কোনো পালটা আক্রমণ করেননি।
হেলপারের গ্রেপ্তার: বৈষম্যের অভিযোগ
আক্রান্ত হেলপারের নাম ও পরিচয়ের বিস্তারিত জানা না গেলেও, সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া পোস্ট ও দাবি অনুযায়ী, ঘটনার পর পুলিশ হেলপারকেই গ্রেপ্তার করে। অন্যদিকে, আক্রমণকারী নারীকে কোনো আইনি জটিলতা ছাড়াই ছেড়ে দেওয়া হয় এবং কিছু মহলে তাকে ‘সাহসী নারী’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়।
আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, অভিযুক্ত নারী যদি কোনো হয়রানির শিকারও হয়ে থাকেন, তবে তার প্রতিকার চাওয়া উচিত ছিল আইন বা সুনির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু, শারীরিক আক্রমণ এবং জনসমক্ষে সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
💬 বিশেষজ্ঞের মন্তব্য (সামাজিক মাধ্যমের বিশ্লেষণ):
“আইন সকলের জন্য সমান হওয়া উচিত। যদি আক্রান্ত ব্যক্তি পুরুষ হন এবং আক্রমণকারী নারী—কেবল এই কারণে আক্রমণকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে আক্রান্তকে গ্রেপ্তার করা হয়, তবে তা ‘জেন্ডার ডিসক্রিমিনেশন’। এই ঘটনা সমাজের চোখে পুরুষদের প্রতি হওয়া সহিংসতাকে লঘু করে দেখার প্রবণতাকে তুলে ধরে।”
পুলিশের নীরবতা:
হেলপারের গ্রেপ্তার এবং এই বৈষম্যের অভিযোগের বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো সুস্পষ্ট বা আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ঠিক কোন ধারায় হেলপারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং আক্রমণকারী নারীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা, তা নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে।
এই ঘটনাটি আবারও গণপরিবহনে নিরাপত্তা এবং যেকোনো লিঙ্গের ব্যক্তির প্রতি হওয়া সহিংসতার বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলল। সমাজের দাবি, যেকোনো সহিংসতায় লিঙ্গ নির্বিশেষে আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগ নিশ্চিত করা হোক।
