ইসরায়েলের লাগাতার হামলায় বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকা এখন যেন এক বিশাল খোলা কারাগার। খাবার, পানি, ওষুধ—সবকিছুর ঘাটতি। চারদিক থেকে অবরুদ্ধ সেই গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিশ্বের নানা দেশের মানুষ।
সেই কারণেই এখন বিশ্বজুড়ে চলছে এক ঐতিহাসিক আন্দোলন — ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’।
এই উদ্যোগে যোগ দিচ্ছে বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার কর্মী, চিকিৎসক, সাংবাদিক আর সাধারণ মানুষ।
তারা নৌকায় করে সাহায্য নিয়ে গাজা পৌঁছানোর চেষ্টা করছে — যেন অন্তত কিছু খাদ্য আর ওষুধ পৌঁছানো যায় সেই যুদ্ধবিধ্বস্ত শিশু আর পরিবারের হাতে।
সুমুদ ফ্লোটিলা কী?
‘সুমুদ’ শব্দটা এসেছে আরবি ভাষা থেকে, মানে অটল থাকা বা দৃঢ়তা।
যারা এই অভিযানে অংশ নিচ্ছে, তারা বিশ্বাস করে— গাজার মানুষদের পাশে দাঁড়ানো মানে মানবতার পক্ষে দাঁড়ানো।
ফ্লোটিলার জাহাজগুলোতে জাতিসংঘ অনুমোদিত মানবিক সহায়তা বহন করা হচ্ছে। কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনী একের পর এক জাহাজ আটকে দিচ্ছে, আবারও সহায়তার পথ বন্ধ করার চেষ্টা করছে।
কেন সবাই নৌকায় উঠছে?
বড় বড় রাষ্ট্র বা আন্তর্জাতিক সংস্থা যখন মুখে শান্তির কথা বললেও বাস্তবে কিছুই করছে না, তখন সাধারণ মানুষ নিজেরাই রাস্তায় নেমেছে।
তাদের বিশ্বাস যদি সরকার চুপ থাকে, তবে মানুষ নিজেরাই এগিয়ে যাবে মানবতার পাশে।
কানাডা, নরওয়ে, তুরস্ক, স্পেন, মালয়েশিয়া থেকে শুরু করে বাংলাদেশেরও কিছু সংগঠন এই অভিযানের প্রতি সংহতি জানিয়েছে।
বিশ্বজুড়ে নানা শহরে এখন স্লোগান উঠছে
নৌকা যাবে গাজায়, থামানো যাবে না মানবতার যাত্রা!
এক অংশগ্রহণকারীর ভাষায়
নরওয়ের এক স্বেচ্ছাসেবী বলেন,
আমরা জানি ঝুঁকি আছে, কিন্তু গাজার শিশুরা যে মৃত্যুর মুখে বেঁচে আছে, তার চেয়ে ভয়াবহ আর কী হতে পারে? তাই এই নৌকাই আমাদের প্রতিবাদের ভাষা।
উপসংহার
পুরো পৃথিবী আজ বুঝে গেছে, যুদ্ধের মধ্যে আসল লড়াইটা কেবল রাজনীতির না— এটা মানবতার লড়াই।
যারা গাজার পথে সেই নৌকায় উঠছে, তারা কেবল সাহায্য নিয়ে যাচ্ছে না—
তারা নিয়ে যাচ্ছে একটা বার্তা:
মানুষ এখনো মানুষ হয়ে থাকতে চায়।