সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মোহাম্মদ সোহায়েলকে কানাডার টরন্টো শহরে দেখা গেছে—এমন দাবি ছড়িয়ে পড়েছে। তবে বাংলাদেশ কারা অধিদফতর জানিয়েছে, এই তথ্য সম্পূর্ণ গুজব ও ভিত্তিহীন।
রোববার (২৬ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কারা অধিদফতর জানায়, সোহায়েল বর্তমানে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক আছেন। তার সম্পর্কে ছড়ানো খবরগুলো সোশ্যাল মিডিয়া প্রপাগান্ডা ছাড়া আর কিছু নয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কমান্ডার সোহায়েলকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে, যা একেবারেই সত্য নয়। জনগণকে অনুরোধ করা হচ্ছে—এ ধরনের গুজবে বিভ্রান্ত না হতে।
এর আগে শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) রাতে সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট ভাইরাল হয়, যেখানে দাবি করা হয় যে একজন সামরিক কর্মকর্তা নাকি সোহায়েলকে টরন্টোর স্কারবোরো এলাকায় দেখেছেন।
তবে কারা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, এসব খবরের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো সম্পর্ক নেই।
উল্লেখ্য, রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মোহাম্মদ সোহায়েলকে ২০২৩ সালের ২০ আগস্ট গ্রেফতার করা হয়। তার আগের দিনই নৌবাহিনী থেকে তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে গুম, হত্যা ও দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
সোহায়েল ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কমোডোর থেকে রিয়ার অ্যাডমিরাল পদে উন্নীত হন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি কোনো গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কোর্স বা জাহাজ কমান্ড ছাড়াই রাজনৈতিক প্রভাবের মাধ্যমে এই পদোন্নতি পান।
তিনি এক বছরেরও বেশি সময় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ছিলেন।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন ২০১০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত। সেই সময় তার বিরুদ্ধে গুম ও হত্যা-সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ ওঠে।
একটি ঘটনায় অভিযোগ করা হয়, তিনি ২০১২ সালে ছাত্রশিবির নেতা গোলাম মর্তূর্জা নিহিমকে অপহরণের নির্দেশ দেন। ওই ঘটনায় নিহিমকে ৪৭ দিন আটকে রাখা হয়, যা মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
কারা অধিদফতরের সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, বর্তমানে কমান্ডার সোহায়েল কেরানীগঞ্জ কারাগারেই আটক আছেন, এবং তাকে কানাডায় দেখা গেছে—এমন দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর।
