দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব এখনও কমেনি। গত ২৪ ঘণ্টায় এই মশাবাহিত রোগে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ১,১৪৩ জন। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৩ জনে, আর আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬৫ হাজার ৪৪০ জনে।
রোববার (২৫ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিভাগভিত্তিক ডেঙ্গু আক্রান্তের পরিসংখ্যান
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্তদের মধ্যে—
- ঢাকা বিভাগে ১৭০ জন,
- ঢাকা উত্তর সিটিতে ১২৪ জন,
- ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৫৭ জন,
- চট্টগ্রাম বিভাগে ১০৪ জন,
- বরিশালে ১২৬ জন,
- খুলনায় ৩১ জন,
- ময়মনসিংহে ৪৭ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
চলতি বছরে ইতিমধ্যে ৬১ হাজার ৩৯৩ জন ডেঙ্গু রোগী সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন।
ডেঙ্গুর মৌসুম না থাকলেও সংক্রমণ বাড়ছে
সাধারণত অক্টোবরের পর ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে আসে। তবে এবার পরিস্থিতি উল্টো। চিকিৎসকরা বলছেন, ডেঙ্গু এখন আর মৌসুমি নয়; সারা বছরই আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।
ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন,
আমাদের আশঙ্কা—আগামী কয়েক মাসেও ডেঙ্গুর সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে না আনলে শীতকালেও এর প্রকোপ বজায় থাকবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গুর ভাইরাসে পরিবর্তন এসেছে। তাই এখন বছরজুড়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
ভ্যাকসিন নিয়ে মতামত
কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন,
বর্তমানে কিউডেঙ্গা ভ্যাকসিনই সবচেয়ে কার্যকর হিসেবে বিবেচিত। এটি বাংলাদেশে ব্যবহারযোগ্য কি না, সে বিষয়ে এখনই নীতিনির্ধারকদের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন,
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে যে কার্যক্রম চলছে, সেটিকে আরও জোরদার করতে হবে। মশার প্রজননস্থল ধ্বংস ও সচেতনতা বাড়ানো ছাড়া বিকল্প নেই।
গত বছরের তুলনা
২০২৪ সালে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ লাখেরও বেশি মানুষ, আর মারা গিয়েছিলেন ৫৭৫ জন।
তার আগের বছর, অর্থাৎ ২০২৩ সালে মৃত্যু হয়েছিল ১,৭০৫ জনের, যা ছিল ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা—যদি এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তবে এ বছরও পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।
সারসংক্ষেপ:
- নতুন মৃত্যু: ৪ জন
- নতুন আক্রান্ত: ১,১৪৩ জন
- মোট মৃত্যু: ২৬৩ জন
- মোট আক্রান্ত: ৬৫,৪৪০ জন
- সুস্থ হয়েছেন: ৬১,৩৯৩ জন
- সংক্রমণ বাড়ছে শীত মৌসুমেও
