এক সময় সিনেমার পর্দায় দাপট দেখাতেন ইসমাইল হোসেন, যিনি ফকিরা নামেই বেশি পরিচিত। খল চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। ৭০০’রও বেশি সিনেমায় কাজ করেছেন এ অভিনেতা। কিন্তু বয়সের ভার আর অসুস্থতা মিলিয়ে এখন ৬৫ বছরের ফকিরা শয্যাশায়ী। তিনবার স্ট্রোক করায় আর কথা বলতে পারেন না।
সম্প্রতি ঢাকার মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে ফকিরার বাসায় যান বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদস্য সনি রহমান। সেখানে গিয়ে তিনি অভিনেতার বর্তমান অবস্থা দেখে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। সেই ভিডিওতে দেখা যায়, বহুদিনের কর্মস্থল বিএফডিসিতে (বাংলাদেশ ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন) যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন ফকিরা।
অভিনেতার সেই ছোট্ট ইচ্ছে পূরণ করতে সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) পরিবার ও সহকর্মীদের সহযোগিতায় সনি রহমান তাকে এফডিসিতে নিয়ে আসেন।
বিকেলের দিকে ফকিরাকে যখন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির অফিসে আনা হয়, তখন তিনি আবেগ সামলাতে পারেননি। ফিরোজা রঙের গেঞ্জি আর কালো প্যান্ট পড়া ফকিরার চোখ ভিজে ওঠে অশ্রুজলে। সহকর্মীরাও চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। কথা বলতে না পারলেও ফকিরার দৃষ্টি যেন সব কিছু বলছিল।
সনি রহমান সাংবাদিকদের বলেন, “ফকিরা ভাই এক সময় প্রতিদিন এফডিসিতে আসতেন। কাজ থাকুক বা না থাকুক, তিনি নিয়মিত আসতেন। এখন অসুস্থ হয়ে একেবারে ঘরে বন্দি। কয়েক দিন আগে তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে এফডিসিতে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। সেই ইচ্ছে পূরণ করতেই আমরা তাকে নিয়ে এসেছি।এক সময় রেস্তোরাঁ ব্যবসা ছেড়ে অভিনয়ে আসেন ফকিরা। খল চরিত্রের পাশাপাশি ফাইটার হিসেবেও তার আলাদা নাম ছিল। করোনার পর থেকে তিনি আর আগের মতো নিয়মিত কাজ পাননি। তখন থেকেই সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছিল তার। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে চলছে তার পরিবার।
সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, ফকিরার চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা লাগবে। তবে এ বিষয়ে সনি রহমান বলেন, “পরিবারের পক্ষ থেকে কোথাও কখনো টাকা চাইনি। শুধু সবার কাছে দোয়া চাওয়া হয়েছে।”
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, ফকিরার চিকিৎসার বিষয়ে তারা খোঁজখবর রাখছেন এবং প্রয়োজনে পাশে থাকবেন।