দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বড় বিজ্ঞপ্তি আসছে আগামী মাসেই।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) মহাপরিচালক আবু নূর মোহাম্মদ শামসুজ্জামান জানিয়েছেন, নভেম্বরের মধ্যেই নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের লক্ষ্য নিয়েই তারা কাজ করছেন।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাজধানীর মিরপুরে নিজ কার্যালয়ে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এই তথ্য জানান।
মহাপরিচালক বলেন, “বর্তমানে সারাদেশে প্রায় ১৩ হাজার ৫০০ সহকারী শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা হাতে পেলেই আমরা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করব। আশা করছি নভেম্বরেই তা সম্ভব হবে।”
তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরে আরেকটি সমস্যা বহাল আছে—৩২ হাজার সহকারী শিক্ষক বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, কিন্তু একটি মামলার কারণে তারা পদোন্নতি পাচ্ছেন না।
মামলার রায় হলে আমরা এই পদগুলো পূরণ করতে পারব। তখন সহকারী শিক্ষকের আরও প্রায় ৩২ হাজার নতুন পদ শূন্য হবে, যা পূরণের জন্যও নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে,” বলেন আবু নূর মোহাম্মদ শামসুজ্জামান।
সহকারী শিক্ষকদের বেতনগ্রেড উন্নয়নে পদক্ষেপ
মহাপরিচালক আরও জানান, সহকারী শিক্ষকদের জন্য ১১তম গ্রেডে উন্নীত করার সুপারিশ ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে এবং পে কমিশনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।
তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষকদের জন্য আমরা ইতোমধ্যেই ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছি। সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডের প্রস্তাবও মন্ত্রণালয়ে গেছে। আশা করছি খুব শিগগিরই ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে।
প্রশিক্ষণ ও অবকাঠামো উন্নয়নে জোর
শিক্ষকদের মানোন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগের কথাও জানান তিনি।
“আমরা শিক্ষকদের লিডারশিপ ও অন্যান্য প্রশিক্ষণ আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক করার কাজ করছি। পাশাপাশি, প্রধান শিক্ষকদের আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে,” বলেন মহাপরিচালক।
আগে প্রধান শিক্ষকরা ক্ষুদ্র মেরামত বা স্লিপ বাবদ সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকা খরচ করতে পারতেন। এখন সেই সীমা বাড়িয়ে তিন লাখ টাকা করা হচ্ছে। নির্মাণ ও মেরামতের বিল প্রদানের ক্ষেত্রে এখন থেকে প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষা অফিসার উভয়ের যৌথ স্বাক্ষর লাগবে বলেও জানান তিনি।
ইন্টারেক্টিভ প্রযুক্তি আসছে প্রাথমিক শিক্ষায়
শামসুজ্জামান বলেন, “আমরা প্রাথমিক স্কুলগুলোতে ইন্টারেক্টিভ ফ্ল্যাট প্যানেল সরবরাহের কাজ শুরু করেছি। ইতোমধ্যে প্রায় তিন হাজার স্কুলে বিতরণের পর্যায়ে রয়েছি। আগামী ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে দেশের অর্ধেকের বেশি স্কুলে এটি স্থাপন করা যাবে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, আমরা যেভাবে কাজ করছি, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় জরাজীর্ণ থাকবে না। শিক্ষার্থীরা আরও আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর পরিবেশে পড়াশোনা করতে পারবে।
