মধ্যরাতে সেনাবাহিনীর বার্তা

0
32
খাগড়াছড়ি গুইমারা সহিংসতা সেনাবাহিনী
খাগড়াছড়ি গুইমারা সহিংসতা সেনাবাহিনী

খাগড়াছড়ি আর গুইমারা এলাকায় সাম্প্রতিক সহিংসতা নিয়ে সেনাবাহিনী নিজেদের বক্তব্য জানিয়েছে। রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়।

আইএসপিআর জানায়, গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে মোটরসাইকেল চালক মামুন হত্যার পর থেকেই ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলো নানা অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করে আসছে। সেই ঘটনার বর্ষপূর্তিকে ঘিরেও তারা এ বছর বিভিন্ন জায়গায় মিছিল ও আন্দোলন করেছে।
এর মধ্যে ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে ইউপিডিএফের কর্মী শয়ন শীলকে সেনা ও পুলিশের সহায়তায় আটক করা হয়। পরে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হলেও ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ ও হরতালের ডাক দেয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও দেশি-বিদেশি ব্লগাররা নানা উসকানিমূলক বক্তব্য ছড়ায়।
আইএসপিআর জানায়, ২৬ সেপ্টেম্বর ইউপিডিএফের নেতৃত্বে আন্দোলনকারীরা সেনা টহল দলের ওপর ইট-পাটকেল ছোড়ে, এতে কয়েকজন সেনা আহত হন। এরপরও সেনারা ধৈর্য্য ধরে পরিস্থিতি সামাল দেন। কিন্তু ২৭ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি শহরে বড় ধরনের সংঘর্ষ বাধে। তখন বাঙালি ও পাহাড়িদের মধ্যে দাঙ্গার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। অবস্থা নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। সেনা, বিজিবি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেষ্টায় অবশেষে বড় ধরনের ক্ষতি ঠেকানো যায়।

কিন্তু পরদিন ২৮ সেপ্টেম্বর গুইমারার রামসু বাজার এলাকায় আবারও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। ইউপিডিএফের লোকজন রাস্তায় অবরোধ দিয়ে বাঙালিদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া করে এবং সেনাবাহিনীর ওপর দেশীয় অস্ত্র, ইট-পাটকেল ও গুলতি দিয়ে হামলা চালায়। এতে কয়েকজন সেনা সদস্য ও অফিসার আহত হন। এমনকি পাহাড়ের দিক থেকে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে গুলিও চালানো হয়, এতে সাধারণ মানুষও আহত হয়। পরে সেনাদের তৎপরতায় পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসে।

সেনাবাহিনীর দাবি, ইউপিডিএফ পরিকল্পিতভাবে নারীদের ও শিশুদেরও আন্দোলনে ব্যবহার করছে এবং বাইরে থেকে অস্ত্র এনে এলাকাকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। রোববার বিকেলে কাপ্তাইয়ে এক চেকপোস্টে ইউপিডিএফের পাঠানো অস্ত্রও আটক করা হয়েছে।

আইএসপিআর জানায়, গত ১৯ থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যেসব ঘটনা ঘটেছে তা শুধু সহিংসতা নয়, বরং পুরো পার্বত্য চট্টগ্রামকে অশান্ত করার একটি বড় ষড়যন্ত্র। তাই সেনাবাহিনী সব জাতিগোষ্ঠীর মানুষ ও রাজনৈতিক নেতাদের ধৈর্য্য ধরতে বলেছে এবং শান্তি ফিরিয়ে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছে।

সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা দেশের অখণ্ডতা রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব রকম ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here