সোমবার সকালে মিরপুর শের-ই–বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ দলের নিয়মিত অনুশীলন শুরু হয় একেবারে স্বাভাবিক ছন্দে। গা গরমের পর ছিল ফিল্ডিং প্র্যাকটিস, তারপর ব্যাটিং-বোলিং সেশন। কিন্তু এর মাঝেই দেখা যায় এক অদ্ভুত দৃশ্য—নেট সেশনে খেলোয়াড়রা ব্যবহার করছেন ছোট আকারের একটি ব্যাট, যেটি মূলত ‘ক্যাচিং ব্যাট’।
ইনডোর সেশনে নিয়মিত অনুশীলনের পাশাপাশি এদিন সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্তসহ বেশ কয়েকজন ব্যাটার সেন্টার উইকেটে ছোট ব্যাট হাতে ব্যাটিং ড্রিল করেন। নাসুম আহমেদ, তানভির ইসলাম, রিশাদ হোসেনসহ স্পিনারদের বিপক্ষে তারা দীর্ঘ সময় এই বিশেষ ব্যাট দিয়ে খেলেন। লক্ষ্য একটাই—স্পিন বোলিংয়ের বিরুদ্ধে ফুটওয়ার্ক ও বলের কাছাকাছি খেলার অভ্যাস তৈরি করা।
টি-টোয়েন্টিতে ‘মঙ্গুজ ব্যাট’ ব্যবহারের নজির নতুন নয়, আবার টেস্টে সুইং সামলাতে সরু ব্যাটে অনুশীলন করাও পরিচিত ব্যাপার। তবে এবার বাংলাদেশের ব্যাটাররা ছোট ক্যাচিং ব্যাট ব্যবহার করে নতুন কৌশল নিয়েছেন, যা মূলত স্পিন মোকাবিলার প্রস্তুতির অংশ।
প্রথম ওয়ানডেতে মিরপুরের টার্নিং উইকেটে ব্যাটারদের বেশ বিপাকে পড়তে হয়। রিশাদ হোসেন একাই ৬ উইকেট নিয়ে ক্যারিবিয়ান ব্যাটিং লাইন ভেঙে দেন। অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিনার খ্যারি পিয়েরে ও রস্টন চেজও বাংলাদেশের ইনিংস চেপে ধরেন—তাদের ২০ ওভারে মাত্র ৪৭ রান আসে। ফলে, দ্বিতীয় ম্যাচের আগে দল স্পষ্ট বুঝে গেছে, এবার লড়াই স্পিনের বিপক্ষে টিকে থাকার।
এই বাস্তবতা মাথায় রেখেই স্পিন কোচ মুশতাক আহমেদের পরামর্শে ছোট ব্যাটে অনুশীলন করেন ব্যাটাররা। অনুশীলন শেষে মুশতাক জানান,
ছোট ব্যাটে ব্যাটিং করলে ব্যাটারদের মাধ্যাকর্ষণের ভারসাম্য নিচে নামানো সহজ হয়। টার্নিং উইকেটে মাথা সবসময় বলের কাছাকাছি রাখা দরকার। এতে খেলোয়াড়রা বলটা অনেক দেরিতে ও নিয়ন্ত্রিতভাবে খেলতে পারে।
তিনি আরও বলেন,
যখন ব্যাটার পায়ের সঠিক ব্যবহার শুরু করে, তখন ভালো বল থেকেও সিঙ্গেল নেয়া যায়। একজন স্পিনার হিসেবে আমি জানি, ব্যাটার তখন আমাদের ভুল করাতে বাধ্য করে। তাই এমন অনুশীলন খুব কার্যকর।
ফিল্ডিং সেশনের পর প্রধান কোচ ফিল সিমন্স মাঠের মাঝখানে ব্যাটারদের সঙ্গে আলোচনা করেন। কেউ ইনডোরে ফিরে যান, কেউ আবার থেকে যান মূল উইকেটে। তাদের ব্যাটিংয়ে ছিল না অনিয়ন্ত্রিত শট—বরং ম্যাচের মতোই দায়িত্ব নিয়ে খেলেছেন তাওহিদ হৃদয় ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনরা।
মুশতাকের ভাষায়,
আমাদের লক্ষ্য ছিল নেট প্র্যাকটিসকে ম্যাচের মতো আবহে রূপ দেওয়া। এতে ব্যাটারদের ‘মাসল মেমরি’ তৈরি হয় এবং তারা বুঝতে পারে, বাস্তবে ম্যাচেও কীভাবে এই পরিস্থিতি সামলাতে হবে।
বাংলাদেশ দল মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হবে একই মাঠে, যেখানে স্পিনই হতে পারে বড় চ্যালেঞ্জ।
